2.9.11

রচনা: শখের মৃৱশিল্প

ভূমিকা: মানুষ যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকে, সুন্দর করে তৈরি করে, সুন্দর সুর করে গেয়ে থাকে, তখন তাকে শিল্প বলা হয়। শিল্পের এই কাজকে বলা হয় শিল্পকলা। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প।
মৃৎশিল্পের উপকরণ: মৃৎশিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। তবে সব মাটি দিয়ে এই কাজ হয় না। দোআঁশ মাটি তেমন আঠালো নয়, আর বেলে মাটি ঝরঝরে তাই এগুলো দিয়ে মাটির শিল্প হয় না। মৃৎশিল্পের জন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এঁটেল মাটি বেশ আঠালো। আবার এঁটেল মাটি হলেই যে তা দিয়ে শিল্পের কাজ করা যাবে, তাও নয়। এর জন্য দরকার যত্ন আর শ্রম। দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। পাশাপাশি প্রয়োজন কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। এই যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের মধ্যে অন্যতম হলো একটা কাঠের চাকা। এই চাকায় নরম মাটির তাল লাগিয়ে নানা আকারের মাটির পাত্র ও জিনিস তৈরি করেন কুমোরেরা।
বিভিন্ন রকম মৃৎশিল্প: মৃৎশিল্পের মূল কারিগর আমাদের দেশের কুমোর সম্প্রদায়। যুগ যুগ ধরে কুমোরেরা বংশপরম্পরায় তৈরি করে আসছেন নানা রকম মৃৎশিল্প। এসব মৃৎশিল্পের মধ্যে রয়েছে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠে তৈরির নানা ছাঁচ ইত্যাদি। এ ছাড়া কুমোরেরা তৈরি করে আসছেন উৎসব-পার্বণের জন্য নানা রঙের বাহারি মাটির জিনিস ও তৈজসপত্র।
বাংলাদেশের প্রাচীন মৃৎশিল্প: হাঁড়ি, কলসি ছাড়াও বাংলাদেশে একসময় গড়ে উঠেছিল পোড়ামাটির ফলকের সুন্দর কাজ। এর অন্য নাম টেরাকোটা। এই টেরাকোটা বাংলার অনেক পুরোনো শিল্প। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এই টেরাকোটা।
শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের বৌদ্ধস্তূপ ও দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরে এই টেরাকোটার কাজ রয়েছে। তা ছাড়া বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে পাওয়া গেছে পোড়ামাটির অপূর্ব সুন্দর কাজ। পোড়ামাটির এই ফলক বাংলার প্রাচীন মৃৎশিল্প। সম্প্রতি নরসিংদীর উয়ারী বটেশ্বরে পাওয়া গেছে প্রায় হাজার বছর আগের সভ্যতার নিদর্শন। মাটির খুঁড়ে পাওয়া গেছে নানা ধরনের মাটির সুন্দর পাত্র আর ফলক।
মৃৎশিল্পের বর্তমান ব্যবহার: আজকাল যদিও প্রাচীন আমলের মতো ওরকম টেরাকোটা হচ্ছে না, তবে পোড়ামাটির নকশার কদর বেড়েছে।
বড় বড় সরকারি-বেসরকারি ভবনে আজকাল সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য নানা রকম নকশা করা মাটির ফলক ব্যবহূত হচ্ছে। আমাদের দেশের কুমোরেরাই এসব তৈরি করেছেন।
উপসংহার: মৃৎশিল্পের কাজ এ দেশে শুরু হয়েছে হাজার বছর আগে। এই শিল্প আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব। এ দেশের মানুষের মন যে শিল্পীর মন, মৃৎশিল্প তারই পরিচয় বহন করে। এই শিল্পের চর্চা ও সম্প্রসারণে আমাদের এগিয়ে আসা দরকার।

1 comment:

  1. Anonymous29/4/22

    This is not a full rochona there was only vomika no other things

    ReplyDelete