Islam Sikka


অধ্যায়-১
 # রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর দাও।
প্রশ্ন: ঈমান কাকে বলে? আকাঈদ বলতে কী বোঝ? আলোচনা করো।

উত্তর: ঈমান একটি আরবি শব্দ। বাংলা ভাষায় ঈমান শব্দের অর্থ হলো দৃঢ়বিশ্বাস। ইসলামি পরিভাষায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন সেসব বিষয়কে অন্তরে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করাকে ঈমান বলে।
আকাঈদ শব্দটি আকিদা শব্দের বহুবচন। আল্লাহ তাআলা এক, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তাআলার সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল, আসমানি কিতাব, ফেরেশতা, আখিরাত, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত বিষয়ে দৃঢ়বিশ্বাস বা প্রত্যয়ের নাম আকিদা। একজন প্রকৃত মুসলিম তিনি, যিনি অন্তরে যে আকিদা পোষণ করেন, তা ভাষায় প্রকাশ করেন এবং কর্মে তার প্রতিফলন ঘটান।
প্রকৃত মুসলিম হওয়ার জন্য একজন মানুষের ঈমান ও আকিদা বিশুদ্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে প্রথম ও প্রধান হচ্ছে ঈমান। আবার বিশুদ্ধ আকিদা ছাড়া প্রকৃত মুমিন হওয়া যায় না। তাই আমরা ঈমান ও আকিদা সম্পর্কিত বিষয় বিস্তারিতভাবে পালনের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে জীবন গঠন করব।
প্রশ্ন: আল্লাহ তাআলার পরিচয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তর: আল্লাহ তাআলা আমাদের স্রষ্টা। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তিনি একমাত্র হুকুমদাতা, রিজিকদাতা ও পরিত্রাণকারী। আমাদের সামনে যা কিছু আছে, আমরা যা কিছু দেখতে পাই এ সবকিছুর দিকে তাকালে মহান আল্লাহর পরিচয় পাওয়া যায়। কারণ, আমাদের চারপাশের গাছপালা, ফুল, ফল, পাখি, চোখজুড়ানো সবুজ ধানের খেত, ছোট-বড় নদ-নদী, খাল-বিলের পানি, মাছ ইত্যাদি এমনিতেই সৃষ্টি হয়নি। এগুলো সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তাআলা। শুধু তা-ই নয়, লালন-পালন করে এ সবকিছু বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি। তা ছাড়া আমাদের মাথার ওপরের নীল আকাশ, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, উপগ্রহ, তারকারাজি—এসবও তাঁর মহান সৃষ্টি। পশুপাখি, জীবজন্তু, সাগর, মহাসাগরসহ এই পৃথিবীর কোনো কিছুই আপনা-আপনি তৈরি হয়নি। কোনো মানুষও এগুলো তৈরি করতে পারে না। এই মহাবিশ্বের সবকিছুরই একমাত্র স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা। পবিত্র কোরআনে আছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন।’ (সূরা আস-সাজদাহ: ৪) এই মহাবিশ্বে আরও অনেক কিছু আছে, যা আমরা দেখতে পাই না। সেগুলোও সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তাআলা। কাজেই মহাবিশ্বের দেখা-অদেখা, আমাদের জানা-অজানা বস্তুসমূহের সৃষ্টিরহস্য অনুধাবন করলে আল্লাহ তাআলার পরিচয় পাওয়া যায়। আমরা আল্লাহ তাআলার সৃষ্ট সব সৃষ্টির সেরা, মানুষ। আমাদের জীবন ও মৃত্যুর মালিক তিনি। আমরা এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ তাআলার ইবাদত করব এবং বিপদে-আপদে সবসময় আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করব।

প্রশ্ন: কে সূর্য সৃষ্টি করেছেন? সূর্য আমাদের কী কাজে লাগে?

উত্তর: পবিত্র কোরআনে আছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মাঝে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন।’ কাজেই সূর্যও সৃষ্টি করেছেন মহাবিজ্ঞানী ও মহাশক্তির অধিকারী মহান আল্লাহ তাআলা।
আমাদের জীবন যাপনের জন্য অনেক রকমের কাজ করতে হয়। কাজ করতে শক্তির প্রয়োজন। পানি ও তাপ থেকেই আমরা এই শক্তি পেয়ে থাকি। আরও নানা জিনিস থেকে আমরা শক্তি পেয়ে থাকি। এসব শক্তির মূল উৎস হলো মহান আল্লা তাআলার সৃষ্টি সূর্য। সূর্যের আলো ছাড়া কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না। কোনো প্রাণী শক্তি পায় না। যেমন, একটি গাছের চারাকে একটি পাতিল বা ঢাকনা দিয়ে কয়েক দিন ঢেকে রাখলে দেখা যাবে চারাটি সাদাটে বা নিস্তেজ হয়ে গেছে। আলো না পাওয়ার জন্য এমনটি হয়েছে বোঝা যায়। আলো না পেলে শক্তির অভাবে চারাটি একদিন মরে যাবে। কাজেই মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা, তৃণলতা ইত্যাদি সূর্যের আলো ছাড়া বাঁচতে পারে না। তা ছাড়া সূর্য তাপের প্রভাবেই পানিচক্র সংগঠিত হয়ে থাকে। আর এই পানিচক্রের মাধ্যমেই এ বিশাল পৃথিবীর সঙ্গে কোটি মানুষ, জীবজন্তু, পশুপাখি, পোকামাকড়, গাছপালা, তৃণলতা ইত্যাদি বেঁচে আছে। সুতরাং সূর্যই এই পৃথিবীর সবকিছুর বেঁচে থাকার প্রধান উৎস।
প্রশ্ন: পানি কার দান? কীভাবে আমরা পানি পাই তার বর্ণনা দাও।

উত্তর: আমরা জানি, পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোনো জীব বা প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না। গাছপালা, লতাপাতাও পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না। আমাদের বাঁচার জন্য প্রতিদিন প্রায় সব সময় অনেক পানির প্রয়োজন হয়। এই পানি আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলারই দান।
আমরা যেন সহজে ও সব সময় পানি পেতে পারি, তার জন্য আল্লাহ তাআলা এক বিশেষ পদ্ধতি সৃষ্টি করেছেন। প্রতি দিন সূর্যের প্রখর তাপে নদনদী, খালবিল, সাগর-মহাসাগরে প্রচুর পানি জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়। এ বাষ্প শূন্যে বাতাসে ভেসে বেড়ায়। পরে তা আস্তে আস্তে ঘনীভূত হতে থাকে এবং মেঘে পরিণত হয়। মেঘ একপর্যায়ে ভারী হয়ে বৃষ্টির আকারে ঝরে পড়ে। এ পানির কিছু অংশ মাটির নিচে জমা হয়। আর কিছু অংশ নদনদী, খালবিল, সাগর-মহাসাগরে জমা থাকে। এভাবে পানি চক্রাকারে বাষ্প হয়ে পুনরায় পানিতে পরিণত হয়। এ চক্রকে পানিচক্র বলা হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ তাআলা পানিচক্রের মাধ্যমে এ বিশাল পৃথিবীর লাখো কোটি মানুষ, জীবজন্তু, পশুপাখি, পোকামাকড়, গাছপালা, তৃণলতা ইত্যাদি বাঁচিয়ে রাখে। ফসলের খেতে নিয়মিত এ পানি দিয়ে তিনি আমাদের সবাইকে লালন-পালন করেন। কাজেই পানিচক্রের একটি চিত্র মনোযোগ দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, আল্লাহ তাআলা কত মহান ও দয়াময়। তিনি কীভাবে এ পানিচক্রের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিশাল পৃথিবীর সবকিছুকে পানি সবরাহ করছেন। আল্লাহ তাআলার অপার মহিমার কারণেই আমরা নদী, খালবিল, পুকুর, সাগর ও নলকূপের মাধ্যমে মাটির নিচ থেকেও পানি পাই।
প্রশ্ন: আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল—এর ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মানুষ পথ চলতে গিয়ে মনের অজান্তে ভুল করে। মন্দ কাজ করে। আল্লাহ তাআলার হুকুম অমান্য করে। এমনকি শয়তানের প্ররোচনায় এবং কু-রিপুর তাড়নায়ও অনেক সময় অন্যায় ও পাপ কাজ করে থাকে। এভাবে কোনো ব্যক্তি যখন তার পাপ কাজের জন্য অনুতপ্ত হয় এবং ভবিষ্যতে পাপ কাজ না করার সংকল্প করে, আগের সব অন্যায় ও ভুল সে বুঝতে পেরে স্বীয় ভুল স্বীকার করে তখন তার মনে অনুশোচনা হয়, দুঃখ হয়। এ অবস্থায় সে যদি আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা চায় এবং অনুতাপে চোখের পানি ফেলে কাঁদে, তখন আল্লাহ তাআলা তাকে নিজ গুণে ক্ষমা করে দেন। কারণ, আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল। কোরআন মাজিদে আছে: ‘ইন্নাল্লাহ গাফুরুর রাহিম’। অর্থাৎ নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

প্রশ্ন: আখিরাতের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর নাম লেখো।
উত্তর: মৃত্যুর পর থেকে মানুষের যে জীবন শুরু হয় তাকে আখিরাত বা পরকালীন জীবন বলা হয়। আখিরাত বা পরকালীন জীবন অনন্তকালের জীবন। এ জীবনের কোনো শেষ নেই। এ জীবন সীমাহীন। আখিরাতের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর নাম নিচে দেওয়া হলো।
১। কবরে সাওয়াল-জওয়াব ২। কবরে আরাম অথবা আজাব ৩। কিয়ামত ৪। হাশর ৫। মিজান ৬। জান্নাত অথবা জাহান্নাম।
প্রশ্ন: কবরে সাওয়াল ও জওয়াব সম্পর্কে কী জানো লেখো।

উত্তর: সাওয়াল-জওয়াব মানে প্রশ্ন ও উত্তর। আমাদের মৃত্যুর পর প্রত্যেককেই কবরে সাওয়াল-জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে। মুনকার ও নাকির নামক দুজন ফেরেশতা প্রত্যেক মৃত মানুষকে আল্লাহর হুকুমে জীবিত করেন। তাঁরা তখন সদ্য-জীবিত করা মানুষকে নিম্নে বর্ণিত তিনটি সাওয়াল বা প্রশ্ন করেন: ১. প্রথম সাওয়াল: মান রাব্বুকা? অর্থ: তোমার রব কে? ২. দ্বিতীয় সাওয়াল: মা দিনুকা? অর্থ: তোমার দীন বা জীবন ব্যবস্থা কী?
৩. তৃতীয় সাওয়াল: মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে দেখিয়ে প্রশ্ন করা হবে: মান হাযার রাজুল? অর্থ: এ ব্যক্তি কে?
আমাদের মহানবী (সা.) কবরের এই সাওয়াল বা প্রশ্নগুলোর সঠিক জবাব বা উত্তর আমাদের শিখিয়ে গেছেন। নিচে মহানবী (সা.) এর শেখানো কবরের সাওয়ালগুলোর জবাব লেখা হলো:
১। প্রথম সাওয়ালের জবাব হলো: রাব্বি আল্লাহ।
অর্থ: আমার রব আল্লাহ।
২। দ্বিতীয় সাওয়ালের জবাব হলো: দীনি আল-ইসলাম অর্থ: আমার দীন ইসলাম।
৩। তৃতীয় সাওয়ালের জবাব হলো: হাযা রাসূলুল্লাহ অর্থ: ইনি আল্লাহর রাসূল।
যেসব ব্যক্তি সাওয়ালের সঠিক জবাব দিতে পারবে, তারা কবরে সুখে থাকবে। আর যারা সাওয়ালগুলোর সঠিক জবাব দিতে পারবে না, তারা কবরে দুঃখ-কষ্টে থাকবে।
প্রশ্ন: জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ দাও।

উত্তর: আখিরাত বা পরকালীন জীবনের ছয়টি স্তরের সর্বশেষ স্তর হলো জান্নাত ও জাহান্নাম। নিম্নে জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ দেওয়া হলো:
জান্নাত: জান্নাত বা বেহেশত হলো চির শান্তির স্থান। দুনিয়ায় যারা আল্লাহ ও নবী-রাসূলের কথামতো চলে, আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করে, পাপ কাজ থেকে বিরত থাকে, তারা জান্নাতে যাবে। সেখানে সুখ-শান্তি ও আরামের সব রকম ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে খুব সুস্বাদু খাদ্য, পানীয় ও সুন্দর সুন্দর বাগান থাকবে। অতি মনোরম বালাখানা ও ছোট ছোট নহর থাকবে। জান্নাতবাসী যা চাবে তারা সঙ্গে সঙ্গে তাই পাবে। সেখানে কোনো অভাব থাকবে না। কোনো অশান্তি থাকবে না। কোনো দুঃখ-বেদনাও থাকবে না।
জাহান্নাম: জাহান্নাম বা দোজখ হলো চিরস্থায়ী দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণার স্থান। জাহান্নামের মধ্যে সব স্থানে থাকবে বিভিন্ন রকমের শাস্তি। দুনিয়ায় যারা ঈমান আনেনি, আল্লাহর আদেশ অমান্য করেছে, পাপ কাজ করেছে, শয়তানের অনুসারী হয়েছে, তারা জাহান্নামে যাবে। সেখানে তারা চিরকাল শাস্তি ভোগ করবে। জাহান্নামে শুধু দুঃখ আর দুঃখ। সেখানে থাকবে ভীষণ শাস্তি।
শূন্যস্থান পূরণ
অধ্যায়—১
১। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে প্রথম ও প্রধান হচ্ছে—।
উত্তর: ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে প্রথম ও প্রধান হচ্ছে ঈমান।
২। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের—।
উত্তর: মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের স্রষ্টা।
৩। পবিত্র — আলোকে জীবন গড়া উচিত।
উত্তর: পবিত্র আল-কোরআনের আলোকে জীবন গড়া উচিত।
৪। খালিক অর্থ — ।
উত্তর: খালিক অর্থ সৃষ্টিকর্তা।
৫। আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাতেই আমাদের — হয়।
উত্তর: আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাতেই আমাদের মৃত্যু হয়।
৬। মুসলিমদের — ও — ব্যবহার সুন্দর হয়।
উত্তর: মুসলিমদের চরিত্র ও আচার ব্যবহার সুন্দর হয়।
৭। — ছাড়া কোনো প্রাণী — পারে না।
উত্তর: অক্সিজেন ছাড়া কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না।
৮। আল্লাহ তাআলা — পছন্দ করেন না।
উত্তর: আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীকে পছন্দ করে না।
৯। — ছাড়া কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না।
উত্তর: সূর্যের আলো ছাড়া কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না।
১০। আলো বাতাস মাটি পানি সবই মহান — ।
উত্তর: আলো বাতাস মাটি পানি সবই মহান আল্লাহ তাআলার দান।
১১। মহান আল্লাহ তাআলা সকল — ।
উত্তর: মহান আল্লাহ তাআলা সকল গুণের আধার।
১২। আল্লাহ তাআলা সবার সব — দেখেন।
উত্তর: আল্লাহ তাআলা সবার সব কাজ দেখেন।
১৩। আল্লাহ তাআলা পরম — ।
উত্তর: আল্লাহ তাআলা পরম ক্ষমতাশীল।
১৪। আল্লাহ তাআলা —, অতি —।
উত্তর: আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞানী, অতি সহনশীল।
১৫। আমরা কখনো কারও সঙ্গে — করব না।
উত্তর: আমরা কখনো কারও সঙ্গে কু-পরামর্শ করব না।
১৬। আল্লাহ তাআলা সব সময় সবকিছু —।
উত্তর: আল্লাহ তাআলা সব সময় সবকিছু দেখেন।
১৭। কারও কোনো জিনিস — করব না।
উত্তর: কারও কোনো জিনিস চুরি করব না।
১৮। প্রত্যেক — জন্য আছে পথ —।
উত্তর: প্রত্যেক জাতির জন্য আছে পথ প্রদর্শক।
১৯। প্রত্যেক প্রাণী — গ্রহণ করবে।
উত্তর: প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।
২০। জান্নাত — জায়গা।
উত্তর: জান্নাত সুখ-শান্তির জায়গা।
২১। জাহান্নাম — স্থান।
উত্তর: জাহান্নাম শাস্তির স্থান।
২২। মীযান মানে —।
উত্তর: মীযান মানে পরিমাপক।
২৩। হাশর মানে —।
উত্তর: হাশর মানে সমবেত হওয়া।
২৪। জান্নাতে কোনো — থাকবে না।
উত্তর: জান্নাতে কোনো অশান্তি থাকবে না।
২৫। সাওয়াল-জওয়াব মানে — ও —।
উত্তর: সাওয়াল-জওয়াব মানে প্রশ্ন ও উত্তর।
২৬। আসমানী কিতাব মানে আল্লাহ তাআলার —।
উত্তর: আসমানী কিতাব মানে আল্লাহ তাআলার ওহী সংবলিত কিতাব।
২৭। নবী-রসুলগণ জগতের সব মানুষের জন্য —।
উত্তর: নবী-রসুলগণ জগতের সব মানুষের জন্য আদর্শ।
২৮। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে — সূচনা হয়।
উত্তর: সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দিনের সূচনা হয়।
২৯। মানুষ পথ চলতে গিয়ে — ভুল করে।
উত্তর: মানুষ পথ চলতে গিয়ে মনের অজান্তে ভুল করে।
৩০। আলহামদুলিল্লাহি — আলামিন।
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।
৩১। আল্লাহ তাআলা আমাদের সব —।
উত্তর: আল্লাহ তাআলা আমাদের সব কথা শোনেন।

# শূন্যস্থান পূরণ কর।
২৮. আল-হুসনা অর্থ -। উত্তর: আল-হুসনা অর্থ সুন্দরতম।
২৯। সহনশীলতা-গুণ। উত্তর: সহনশীলতা খুব ভালো গুণ।
৩০। আমরা বিশ্বাস করি-সব শোনেন।
উত্তর: আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ তাআলা সব শোনেন।
৩১। আমরা কারও-তাঁর নিন্দা করব না।
উত্তর: আমরা কারও অসাক্ষাতে তাঁর নিন্দা করব না।
৩২। মহান আল্লাহ তাআলার একটি বড় নির্দেশ হলো-পালন করা। উত্তর: মহান আল্লাহ তাআলার একটি বড় নির্দেশ হলো রোজা পালন করা।
৩৩। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে -সূচনা হয়।
উত্তর: সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দিনের সূচনা হয়।
৩৪। এ পৃথিবীতে যার জন্ম আছে তার অবশ্যই-আছে।
উত্তর: এ পৃথিবীতে যার জন্ম আছে তার অবশ্যই মৃত্যু আছে।
৩৫। আখেরাত বা পরকালীন জীবন-জীবন।
উত্তর: আখেরাত বা পরকালীন জীবন অনন্তকালের জীবন।
৩৬। জান্নাত-জায়গা। উত্তর: জান্নাত সুখ-শান্তির জায়গা।
৩৭। জাহান্নাম-স্থান। উত্তর: জাহান্নাম শাস্তির স্থান।
৩৮। আমরা সব সময়-কথামতো চলব।
উত্তর: আমরা সব সময় আল্লাহতায়ালা ও নবী-রাসুলের কথামতো চলব।
৩৯। আরবি ভাষার শব্দ মিজান মানে-।
উত্তর: আরবি ভাষার শব্দ মিজান মানে পরিমাপক।
৪০। হাশর মানে-। উত্তর: হাশর মানে সমবেত হওয়া।


অধ্যায়-২
প্রশ্ন: ঈদুল ফিতর কাকে বলে?


উত্তর: ‘ঈদ’ মানে আনন্দ। আর ‘ফিতর’ মানে রোজা ভঙ্গ বা শেষ করা। অতএব, ঈদুল ফিতর হলো রোজা শেষ করার আনন্দ। অর্থাৎ, রমজান মাসে রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে রোজা না রেখে যে আনন্দ করা হয় তারই নাম ঈদুল ফিতর। এটি মুসলমানদের একটি বড় ধর্মীয় উৎসব এবং একটা আনন্দের দিন।
এ দিন মনের খুশিতে আমরা পানাহার করি। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের আপ্যায়ন করি। গরিবদের ফিতরা দিই। এভাবে ধনী-গরিব সবাই আনন্দে শরিক হয়।
প্রশ্ন: ঈদের দিনের সুন্নাত কাজগুলো লেখো।
উত্তর: ঈদের দিনে আমাদের কতকগুলো সুন্নাত কাজ রয়েছে। এ কাজগুলো হলো—
১. গোসল করা; ২. ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজের আগেই কিছু খাওয়া; আর ঈদুল আজহার দিন ঈদের নামাজ ও কোরবানির পর খাওয়া; ৩. ঈদুল ফিতরের দিন নামাজের আগেই ফিতরা আদায় করা; ৪. ঈদের সালাত ঈদগাহে আদায় করা; ৫. ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবির বলতে বলতে যাওয়া। আমরা এ সুন্নাতগুলো অবশ্যই পালন করব।
প্রশ্ন: মুসাফির কাকে বলে? মুসাফিরের সালাতের বর্ণনা দাও।
উত্তর: কোনো ব্যক্তি যদি ৪৮ মাইল বা প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে যাওয়ার নিয়ত করে বাড়ি থেকে বের হয়, তাকে মুসাফির বলা হয়।
মুসাফিরের সালাতের বর্ণনা: মুসাফিরের সালাতের বর্ণনা নিম্নরূপ—
১. মুসাফির ব্যক্তি জোহর, আসর ও এশার ফরজ সালাত চার রাকাতের স্থলে দুই রাকাত পড়বে।
২. অসুবিধা থাকলে ফজরের সুন্নত ব্যতীত অন্যান্য সুন্নত সালাত ছেড়ে দিতে পারবে। এতে কোনো গুনাহ হবে না।
৩. জোহর, আসর ও এশা এই তিন ওয়াক্তের সালাত মুসাফির অবস্থায় ইচ্ছে করে চার রাকাত পড়লে গুনাহ হবে।
প্রশ্ন: মসজিদে প্রবেশের এবং মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া বাংলায় লেখো।
উত্তর: মসজিদ শব্দের অর্থ সিজদাহর জায়গা। যে স্থানে মুসলমানরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামায়াতের সঙ্গে আদায় করে, সে স্থানটিকে মসজিদ বলা হয়। আল্লাহ তাআলার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মসজিদ। মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দোয়া পড়তে হয়। এই দোয়া দুটি নিম্নরূপ:
মসজিদে প্রবেশের দোয়া: হে আল্লাহ! আমার জন্য তোমার রহমতের দরজা খুলে দাও।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া: হে আল্লাহ! আমি তোমার অনুগ্রহ কামনা করছি।
প্রশ্ন: মসজিদের আদবগুলো লেখো।
উত্তর: মসজিদের কতকগুলো আদব আছে। এগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. পবিত্র শরীরে পবিত্র পোশাক পরে মসজিদে প্রবেশ করা।
২. মসজিদে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া।
৩. মসজিদে প্রবেশ করে কাউকে কষ্ট না দিয়ে কোনো খালি জায়গায় বসা।
৪. সামনের জায়গা খালি থাকলে সে জায়গায় বসা। নিজে না গিয়ে অন্যকে সামনে যেতে বলা মসজিদের আদবের খেলাপ।
৫. মসজিদের মধ্যে কোনো অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা;
৬. লোকজনকে ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে না যাওয়া;
৭. হইচই ও শোরগোল না করা;
৮. সালাতরত কোনো মুসল্লির সামনে দিয়ে যাতায়াত না করা;
৯. মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দোয়া পড়া।
আল্লাহ তাআলার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি প্রিয় স্থান হলো মসজিদ, মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। তাই এ ঘরের আদব রক্ষা করে চলতে হয়।
প্রশ্ন: কোরবানি বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ‘কোরবানি; শব্দের অর্থ হলো ত্যাগ করা, বিলিয়ে দেওয়া। সবচেয়ে প্রিয়তম ও সুন্দরতম বস্তুকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে বিলিয়ে দেওয়ার প্রথাকে ইসলামের পরিভাষায় কোরবানি বলে। কোরবানি সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন— ‘যে ব্যক্তি খুশি মনে কোরবানি করবে, সে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাবে।’
প্রশ্ন: কোরবানির গোশত কয় ভাগে ভাগ করতে হয়? কাকে কাকে দিতে হয়?
উত্তর: কোরবানির গোশত তিন ভাগে ভাগ করতে হয়।
যাদেরকে দিতে হয়: এই গোশত এক ভাগ নিজেদের জন্য। এক ভাগ আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীর জন্য এবং আরেক ভাগ গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়।
প্রশ্ন: সালাতের আরকান কয়টি ও কী কী?
উত্তর: যে ফরজ কাজগুলো সালাতের মধ্যে করতে হয়, সেগুলোকে সালাতের আরকান বলে। খুব সতর্কভাবে সালাত আদায় করতে হয়। লক্ষ রাখতে হবে একটি ফরজও যেন বাদ না পড়ে। সালাতের আরকান মোট সাতটি। যথা—
১. তাকবির তাহরিমা বা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সালাত শুরু করা।
২. কিয়াম বা দাঁড়িয়ে সালাত পড়া। নারী-পুরুষ উভয়কে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে হবে (তবে অসুস্থ হলে বসে এবং বসতে অক্ষম হলে শুয়ে ইশারায় সালাত আদায় করতে হবে)।
৩. কিরআত অর্থাৎ কোরআন শরিফের কিছু অংশ তিলাওয়াত করা। ৪. রুকু করা। ৫. সিজদাহ করা। ৬. শেষ বৈঠকে বসা।
৭. ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করা।
উপরিউক্ত কাজগুলো সালাতের মধ্যে অবশ্যই যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এর যেকোনো একটি বাদ পড়লে সালাত হবে না।
প্রশ্ন: কোন অবস্থায় সালাত ছাড়া যায়? বর্ণনা করো।
উত্তর: পরিবারের কোনো লোকজন অর্থাৎ মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি যদি কোনো বিপদে পড়ে ডাকেন তবে ফরজ সালাতও ছেড়ে দিয়ে তাঁদের সেবা করা ওয়াজিব। যদি তাঁরা কেউ অসুস্থ থাকেন এবং প্রস্রাব, পায়খানা ইত্যাদি কোনো প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে বা পিছলিয়ে বা কেঁপে কেঁপে পড়ে থাকা অবস্থায় ডাকেন; এমতাবস্থায় সালাত ছেড়ে দিয়ে তাঁদের সাহায্য করতে হবে। আবার কেউ আগুনে পুড়ে বা পানিতে পড়ে চিৎকার করলে সালাত ছেড়ে দিয়ে তাকে উদ্ধার করা যাবে। এরপর সালাত আদায় করতে হবে।
প্রশ্ন: জানাজার সালাত কীভাবে পড়তে হয় লেখো।
উত্তর: মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া হিসেবে যে সালাত আদায় করা হয়, তাকে বলা হয় সালাতুল জানাজা বা জানাজার সালাত। নিচে জানাজার সালাত পড়ার নিয়ম বর্ণনা করা হলো—
১. জানাজার সালাতে রুকু ও সিজদাহ নেই। ইমাম মৃত ব্যক্তিকে সামনে রেখে তার বুক বরাবর দাঁড়াবেন। মুকতাদিরা ইমামের পেছনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে মনে মনে নিয়ত করবে। যারা আরবিতে নিয়াত জানে তারা আরবিতে করবে, আর যারা জানে না তারা বাংলায় নিয়ত করবে—‘আমি আল্লাহর ওয়াস্তে এই মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার নিমিত্তে চার তাকবিরের সঙ্গে জানাজা সালাত আদায় করছি।’ পরে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে ইমামের সঙ্গে দুই হাত কান পর্যন্ত ওঠাতে হবে।
২. এরপর সালাতে তাহরিমা বাধার মতো নাভির ওপর দুহাত বাঁধতে হবে এবং ছানা পড়তে হবে।
৩. ছানা পড়েই হাত বাঁধা অবস্থায় ইমামের সঙ্গে দ্বিতীয়বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে। এরপর দরুদ পাঠ করতে হবে।
৪. তারপর হাত বাঁধা অবস্থাতেই ইমামের সঙ্গে তৃতীয়বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দোয়া পড়তে হবে।
৫. দোয়া পড়া শেষ হলে হাত বাঁধা অবস্থাতেই ইমামের সঙ্গে চতুর্থবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে এবং হাত বাঁধা অবস্থায় ডানে-বামে সালাম ফেরাতে হবে। তারপর হাত ছেড়ে দিয়ে জানাজার সালাত শেষ করতে হবে।
প্রশ্ন: ইবাদত কাকে বলে?
 উত্তর: ইবাদত আরবি শব্দ। ইবাদত শব্দের আভিধানিক অর্থ দাসত্ব, উপাসনা, বন্দেগি, আনুগত্য ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থে ইবাদত হচ্ছে ইসলামের আবশ্যকীয় অনুষ্ঠানাদি— ঈমান, সালাত, সাওম, জাকাত ও হজ ইত্যাদি পালন করা। আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেছেন তা পালন করা এবং যা নিষেধ করেছেন তা না করাই হলো ইবাদত। আমাদের কাজ হলো আল্লাহ তাআলার হুকুম মানা, বন্দেগি করা। মানুষ আল্লাহ তাআলার বান্দা। আল্লাহ তাআলা মানুষের একমাত্র মাবুদ। ইবাদত করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন। নিজেদের সুখ-শান্তির জন্য আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত ও রাসূল (সা.)-এর প্রদর্শিত পন্থায় জীবন অতিবাহিত করাকেই ইবাদত বলে।
প্রশ্ন: আল্লাহ তাআলা আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন?
উত্তর: ইসলামের লক্ষ্য হলো, মানুষকে ইবাদতে অভ্যস্ত বান্দা হিসেবে তৈরি করা। ইবাদত করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। তাঁরই আদেশ-নিষেধ মেনে চলার জন্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেছেন, ‘ওয়ামা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা লিইয়াবুদুন।’ অর্থাৎ, ‘আমি জিন ও মানুষকে শুধু আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।’ সুতরাং, আমাদের উচিত, আল্লাহ তাআলার নির্দেশিত পথে থেকে বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা।
প্রশ্ন: সালাত আদায়কারীকে আল্লাহ তাআলা কী পুরস্কার দেবেন?
উত্তর: সালাত আরবি শব্দ। সালাতকে ফারসি ভাষায় নামাজ বলা হয়। ঈমানের পরই সালাতের স্থান। সালাত সবচেয়ে বড় ইবাদত। এর গুরুত্ব এবং ফজিলতও সবচেয়ে বেশি। সালাতের মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ করা যায়। সালাত আদায়কারী ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার খুব প্রিয় বান্দা। সালাত আদায়কারীকে আল্লাহ তাআলা যেসব পুরস্কার দেবেন। সেগুলো হচ্ছে— ১. তার জীবিকার অভাব দূর করবেন। ২. কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেবেন। ৩. হাশরে আমলনামা ডান হাতে দেবেন। ৪. পুলসিরাত পুল বিজলির মতো তাড়াতাড়ি পার করাবেন।
অতএব, আমাদের আত্মিক, শারীরিক, জাগতিক ও পারলৌকিক উন্নতি ও সুখের জন্য যথাযথভাবে সালাত আদায় করা উচিত।
প্রশ্ন: সালাতের আহকাম বলতে কী বোঝো? আহকাম কয়টি এবং কী কী?
উত্তর: সালাতের মধ্যে কয়েকটি ফরজ কাজ রয়েছে। এগুলো অবশ্যই পালন করতে হবে। এর যেকোনো একটি ছুটে গেলে সালাত হয় না। যে ফরজ কাজগুলো সালাত শুরু করার আগেই করতে হয়, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বা শর্তাবলি বলা হয়।
সালাতের আহকাম সাতটি। যথা—১. শরীর পাক। ২. কাপড় পাক। ৩. জায়গা পাক। ৪. সতর ঢাকা। ৫. কিবলামুখী হওয়া। ৬. ওয়াক্ত হওয়া। ৭. নিয়ত করা।
প্রশ্ন: সালাতের ওয়াজিব কী? যেকোনো ৭টি ওয়াজিবের বর্ণনা দাও।
উত্তর: সালাতের ফরজের পরই ওয়াজিবের স্থান। সালাতের ওয়াজিব মানে অবশ্যকরণীয়। সালাতের মধ্যে কয়েকটি ওয়াজিব কাজ রয়েছে। ইচ্ছা করে এর যেকোনো একটি বাদ দিলে সালাত আদায় হয় না।
সালাতের সাতটি ওয়াজিবের বর্ণনা: ১. সূরা ফাতিহা পড়া।
২. সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সূরা বা কোরআনের কিছু অংশ পড়া। ৩. রুকু করার পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো। ৪. দুই সিজদাহর মাঝখানে সোজা হয়ে বসা। ৫. তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট সালাতে দ্বিতীয় রাকাতের পর বসে তাশাহহুদ পড়া। ৬. সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া। ৭. বিতর সালাতে দোয়া কুনুত পড়া।
প্রশ্ন: সিজদা সাহু বলতে কী বোঝো?
উত্তর: ‘সাহু’ আরবি শব্দ। এর অর্থ ‘ভুল’। সালাতের মধ্যে ভুল হলে সেই ভুল সংশোধনের জন্য যে সিজদা করা হয়, তারই নাম সিজদা সাহু।
অন্যভাবে বলা যায়, ভুলক্রমে সালাতের ওয়াজিব কাজগুলোর যেকোনো একটি বাদ পড়লে সে ভুল সংশোধনের উপায় আছে। এই ভুল সংশোধনের উপায়ই হলো সিজদা সাহু।
প্রশ্ন: সিজদা সাহু আদায় করার নিয়ম লেখো।
উত্তর: সালাতের মধ্যে ভুল হলে সেই ভুল সংশোধনের জন্য যে সিজদা করা হয়, তারই নাম সিজদা সাহু। নিচে সিজদা সাহু আদায় করার নিয়ম বর্ণনা করা হলো—
১. সালাতের শেষ রাকাতে বসে ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়তে হবে।
২. তারপর শুধু ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দুটি সিজদা করতে হবে।
৩. এরপর বসে আবার আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে।
৪. পরে ডানে ও বাঁয়ে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করতে হবে।


অধ্যায়-২
১। ইবাদত মানে আল্লাহ তাআলার — পালন করা।
উত্তর: ইবাদত মানে আল্লাহ তাআলার হুকুম পালন করা।
২। আমরা সব সময় — ও — কথা বলব।
উত্তর: আমরা সব সময় সত্য ও ন্যায় কথা বলব।
৩। ইবাদত করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি — হন।
উত্তর: ইবাদত করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন।
৪। সালাত ইসলামের — রুকন।
উত্তর: সালাত ইসলামের দ্বিতীয় রুকন।