7.8.12

বাংলাদেশের পাখি

বাংলাদেশের পাখি

(এই রচনার অনুসরণে লেখা যায়: আমার চেনা পাখি, কয়েকটি পরিচিত পাখি)

ভূমিকা:
বাংলাদেশের অপরূপ প্রকৃতির এক অপূর্ব উপহার পাখি। এ দেশের মানুষ পাখির ডাকে ঘুমিয়ে পড়ে আবার পাখির ডাকে জাগে। বিভিন্ন ঋতুতে বাংলাদেশে নানা রকম পাখি দেখা যায়।
পরিচিত পাখি:
আমাদের চেনাজানা পাখির সংখ্যা অনেক। দোয়েল, কোকিল, ময়না, টিয়া, কাক, পায়রা, চিল, মাছরাঙা, কাকাতুয়া, বাবুই, কাঠঠোকরা, চড়ুই, টুনটুনি, বুলিবুলি, বউ কথা কও, শালিক, ঘুঘু, বক—এসব আমাদের খুব পরিচিত পাখি।
বিভিন্ন পাখির বর্ণনা:
পাখি অনেক রকমের আছে। এদের মধ্যে গানের পাখি, শিকারি পাখি, রাতের পাখি, ঝিল-পুকুরের পাখি, শীতের পাখি ও পোষা পাখি উল্লেখযোগ্য।
গানের পাখি:
গানের পাখির মধ্যে অন্যতম দোয়েল। গরমের দিনে ঘরের পাশে, লেবুর ডালে, ডালিম শাখায় দোয়েল মনের সুখে গান করে। দোয়েলের মতো গানের গলা খুব কম পাখিরই আছে। শীতের সময় দোয়েল গান করে না। দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি।
শীতের শেষে বসন্ত ঋতুর আগমনী বার্তা নিয়ে আসে কোকিল। কোকিলকে তাই বলা হয় বসন্তের দূত। দেখতে কালো হলেও কোকিলের গানের গলা খুবই মিষ্টি। কোকিলের ‘কুউ-কুউ’ ডাক গানের চেয়েও মধুর। কোকিল কখনো মাটিতে নামে না।
গানের পাখির মধ্যে সবচেয়ে ছোট টুনটুনি। দেখতে ছোট হলেও টুনটুনির গানের গলা বেশ মিষ্টি আর জোরালো। টুনটুনি বেশিক্ষণ উড়ে বেড়াতে পারে না। তবে লম্বা লেজ উঁচিয়ে গাছের এ-ডাল থেকে ও-ডালে বেশ দ্রুত লাফিয়ে বেড়াতে পারে।
শ্যামা, বুলবুলি, বউ কথা কও—এরাও খুব সুন্দর গানের পাখি।
শিকারি পাখি:
মাছরাঙা, বাজপাখি, শকুন, চিল, বক—এসব শিকারি পাখি। মাছরাঙা পুকুরপাড়ে মাটির গর্তে বাস করে আর সুযোগ বুঝে পানিতে টুপ করে ডুব দিয়ে ছোট মাছ ধরে খায়। বাজ আর চিল আকাশের অনেক উঁচুতে উড়ে বেড়ালেও দৃষ্টি থাকে নিচে। সুযোগমতো এরাও ছোঁ মেরে মুরগির ছানা ও অন্যান্য ছোট প্রাণী নিয়ে গাছের ডালে বসে খায়। বক দল বেঁধে আকাশে উড়ে বেড়ায়। আবার খাওয়ার সময় হলে ঝিল-পুকুরের পাড়ে বসে মাছ ধরে খায়।
রাতের পাখি:
পেঁচা আর বাদুড় রাতের পাখি। এরা দিনের বেলা বের হয় না। পেঁচা বিভিন্ন পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে থাকে। বাদুড় গাছের ফল খায়।
ঝিল-পুকুরের পাখি:
পানকৌড়ি, হাঁস, সারস, কোঁড়া—এসব ঝিল-পুকুরের পাখি। এরা ঝিল-পুকুরে পানিতে চরে বেড়ায় আর শামুক, ছোট মাছ ও জলের পোকামাকড় খেয়ে থাকে।
পোষা পাখি:
ময়না, টিয়া, কাকাতুয়া, শ্যামা, শালিক, ঘুঘু, পায়রা—এসব পাখি ঘরে পোষা যায়। পোষা পাখির মধ্যে ময়না সবচেয়ে মজার পাখি। শিখিয়ে দিলে পোষা ময়না মানুষের মতো কথা বলতে পারে এবং মানুষের অনুকরণে নানা রকম শব্দ ও গান করতে পারে। ময়না কালো রঙের পাখি। তবে গলার কাছে একটি হলদে রেখা আছে। টিয়া পাখির পালক হলদে শ্যামল, ঠোঁট লাল রঙের। শালিক, ঘুঘু ও কবুতর খবুই নিরীহ পাখি।
গৃহপালিত পাখি:
মুরগি-হাঁস গৃহপালিত পাখি। এসব পাখি বাংলাদেশের প্রায় ঘরে দেখতে পাওয়া যায়। হাঁস ও মুরগির ডিম আমাদের খুবই প্রিয় খাবার।
উপসংহার:
পাখি বাংলাদেশের প্রকৃতির এক মূল্যবান সম্পদ। শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়, আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও পাখির ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রয়োজনে পাখিসম্পদ সংরক্ষণ করা উচিত। অকারণে কখনো পাখি শিকার করা ঠিক নয়।

1 comment:

  1. ছবি সহ দিলে সুন্দর হতো।

    ReplyDelete