16.5.12

ষোড়শ অধ্যায় (বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তা)

ষোড়শ অধ্যায়

১. সঠিক শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর :
ক. বিশ্বে নানা জাতির ........... আছে।
খ. ........... উপজাতির অধিকাংশ মানুষই ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলায় বসবাস করে।
গ. পাহাড়ে যারা বাস করে তাদেরকে বলা হয় ......।
ঘ. গারোদের .......... পরিচয়ে ......... পরিচয় হয়।
ঙ. খাসিরা বিভিন্ন ........... পূজা করে।
উত্তর : (ক) মানবগোষ্ঠী (খ) গারো (গ) আচ্ছিক (ঘ) মায়ের, বংশ (ঙ) দেবতার
২. নিচের শুদ্ধ উক্তিগুলোর বাম পাশে 'শু' এবং অশুদ্ধ উক্তিগুলোর বাম পাশে 'অ' লেখ :
ক. উপজাতিরা নিজের সামাজিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় রক্ষণশীল।
খ. গারোদের গায়ের রং তামাটে।
গ. খাসি উপজাতিরা ময়মনসিংহ ও রাঙামাটি এলাকায় বাস করে।
ঘ. অল্প কিছু মণিপুরি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী।
ঙ. খাসি সমাজে একই গোত্রে বিয়ের প্রচলন নেই।
উত্তর : (ক) 'শু' (খ) 'অ' (গ) 'অ' (ঘ) 'শু' (ঙ) 'শু'
৩. বামপাশের কথাগুলোর সঙ্গে ডানপাশের কথাগুলো মিল কর :

উত্তর :
বামপাশ
ডানপাশ
ক) মণিপুরি নিজেদের
খ) বৈষ্ণব ধর্মের অধিকারী
গ) খাসি সমাজ
ঘ) মণিপুরি সমাজ
পিতৃতান্ত্রিক।
মণিপুরিরা।
মাতৃপ্রধান।
আরাকানের অধিবাসী ছিলেন।
তৈরি পোশাক পরে।
ক. মণিপুরিরা নিজেদের তৈরি পোশাক পরে।
খ. বৈষ্ণব ধর্মের অধিকারী মণিপুরিরা।
গ. খাসি সমাজ মাতৃপ্রধান।
ঘ. মণিপুরি সমাজ পিতৃতান্ত্রিক।
৪. সঠিক উত্তরের পাশে টিক (্র) চিহ্ন দাও :
৪.১ পৃথিবীতে নানা জাতি সৃষ্টির কারণ কী?
(ক) প্রাকৃতিক (খ) সামাজিক
(গ) রাজনৈতিক (ঘ) ভৌগোলিক
৪.২ উপজাতিরা সাধারণত কোথায় বসবাস করে?
(ক) পাহাড়ি এলাকায় (খ) সমতলভূমিতে
(গ) শহরে (ঘ) গ্রামে
৪.৩ গারোদের মধ্যে যারা পাহাড়ে বাস করে তাদের কী বলে?
(ক) লামদানি (খ) আচ্ছিক
(গ) সাঁওতাল (ঘ) সাংসারেক
৪.৪ খাসি মেয়েরা কী পোশাক পরে?
(ক) শাড়ি ও বল্গাউজ (খ) বল্গাউজ ও লৈফানেক
(গ) লুঙ্গি ও বল্গাউজ (ঘ) ফানেক ও বল্গাউজ
৪.৫ মণিপুরিদের কয়টি ভাষা?
(ক) ৫টি (খ) ৩টি (গ) ৪টি (ঘ) ২টি
সঠিক উত্তর : ৪.১ (ঘ) ৪.২ (ক) ৪.৩ (খ) ৪.৪ (গ) ৪.৫ (ঘ)
৫. ক) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কারা?
উত্তর : ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী : বিশ্বে অনেক জাতি আছে। এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কিছু জনগোষ্ঠী রয়েছে। বাংলাদেশেও বেশ কিছু জনগোষ্ঠী রয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো জনগোষ্ঠী শত শত বছর ধরে এই ভূখণ্ডে বসবাস করে। প্রাচীনকাল থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া ভূমিতে উত্তরাধিকার সূত্রে বসবাস করছে। তারা নিজেদের সামাজিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় সচেতন। যাদের নিজস্ব ভাষা ও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা অন্যান্য জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা। তাদের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বলে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এই ধরনের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী রয়েছে। বাংলাদেশেও প্রায় ৪৫টির অধিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বসবাস করে। তাদের মধ্যে চাকমা, সাঁওতাল, গারো, খাসি, মণিপুরি, মুরং ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
৫. খ) গারোরা কোথায় কোথায় বসবাস করে?
উত্তর :গারোরা যেখানে বাস করে : গারোরা বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনগোষ্ঠী। গারোরা মূলত ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলায় বসবাস করে।
এ ছাড়া বাংলাদেশের নেত্রকোনা, জামালপুর, শেরপুর এবং বৃহত্তর সিলেটের কোনো কোনো এলাকায় গারোরা বাস করে। গারোরা পাহাড় এবং সমতল উভয় জায়গাতেই বাস করে। পাহাড়ে যারা বাস করে তাদের বলা হয় 'আচ্ছিক'। আর সমতলে যারা বাস করে তারা 'লামদানি' নামে পরিচিত।
৫. গ) খাসিদের প্রধান প্রধান খাদ্য কী কী?
উত্তর : বাংলাদেশে প্রধানত সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় খাসি জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করে।
খাসিদের প্রধান খাদ্য : খাসিদের প্রধান খাদ্য ভাত। মাংসও তাদের পছন্দের খাবার। তারা প্রায় সব রকম পশু ও পাখির মাংস খায়। পান-সুপারি খাসিদের খুব প্রিয়। অতিথি এলে প্রথমে তারা পান-সুপারি দিয়ে আপ্যায়ন করে। মধু খেতেও খাসিরা খুব পছন্দ করে।
৫. ঘ) মণিপুরিরা কোন ধর্মের অনুসারী?
উত্তর : মণিপুরিদের আদি বাসস্থান আসামের মণিপুর রাজ্যে। একটি বৃহৎ জাতির অংশ হিসেবে আমাদের দেশে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে মণিপুরিরা বসবাস করে।
মণিপুরিদের ধর্ম : মণিপুরিদের নিজস্ব কোনো ধর্ম নেই। অধিকাংশই বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারী। এরা দেব-দেবীর পূজা করে। রাধা-কৃষ্ণ, বিষুষ্ণ, গৌরাঙ্গ এদের প্রধান দেব-দেবী। মণিপুরিরা মৃতদেহ পুড়িয়ে সৎকার করে থাকে। কিছু সংখ্যক মণিপুরি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী।
৫. ঙ) সব জাতির মধ্যে সম্প্রীতি কীভাবে রক্ষা করা যায়?
উত্তর : যেভাবে সব জাতির মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষা করা যায় : ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভৌগোলিক অবস্থান, জাতিগত আবেগ ইত্যাদি জাতি গঠনের উল্লেখযোগ্য উপাদান। সব জাতির নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। পৃথিবীতে অনেক জাতি রয়েছে। পরস্পরের সহযোগিতা ছাড়া কোনো জাতিই একা টিকে থাকতে পারে না। মানুষ পরস্পর নির্ভরশীল। পৃথিবীকে মানবজাতির জন্য বসবাসযোগ্য রাখতে হলে সব জাতির সহযোগিতা ও সম্প্রীতি একান্ত প্রয়োজন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, ধর্মীয় সহিষুষ্ণতা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিক্ষা প্রভৃতির দ্বারা সব জাতির মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষা করা যায়। এ পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য করতে আমরা সব জাতি পরস্পরকে সহযোগিতা ও শ্রদ্ধা করব। কোনো জাতির মানুষকে ছোট করে দেখব না। সব মানুষকে ভালোবাসব। যেমন সুনামির ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে সব জাতি একসঙ্গে কাজ করেছে। মিয়ানমারে নার্গিস নামক ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত দেশবাসীর প্রতি শোকার্ত সববেদনা জানিয়েছে বিশ্ববাসী।

No comments:

Post a Comment