9.7.12

মানুষের বন্ধু গাছপালা


প্রিয় শিক্ষার্থীরা আজ তোমাদের জন্য রয়েছে বাংলা বিষয়ের প্রবন্ধ ‘মানুষের বন্ধু গাছপালা’।
ড. মাহবুবুল হক রচিত মানুষের বন্ধু গাছপালা প্রবন্ধে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে গাছপালার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

 মূলভাব
গাছপালা আমাদের পরম বন্ধু। গাছপালা ছাড়া পৃথিবীতে আমাদের জীবন অচল। বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে আমরা বেঁচে থাকি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমরা কার্বন ডাই-অক্সাইড নামের বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে ছাড়ি। গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং বাতাসে অক্সিজেন ছাড়ে। গাছপালা না থাকলে একসময় বাতাসের অক্সিজেন একেবারে শেষ হয়ে যেত। আর আমরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তাম।
শুধু তা-ই নয়, গাছপালা আরও অনেকভাবে আমাদের বাঁচতে সাহায্য করে। খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ, পথ্য ইত্যাদির জন্যও আমরা গাছপালার ওপর নির্ভরশীল। পরিবেশ রক্ষার জন্যও গাছপালার কোনো বিকল্প নেই। তাই তো বলা হয়ে থাকে ‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান।’ আমরা গাছ লাগাব এবং পরিবেশরক্ষায় সহায়তা করব। এই মহান উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন আরও গতিশীল করার জন্যই ‘মানুষের বন্ধু গাছপালা’ প্রবন্ধটির প্রতিটি লাইন আমাদের অনুধাবন করা দরকার।

এবার এসো এই প্রবন্ধে ব্যবহূত কয়েকটি শব্দের অর্থ, বাক্য রচনা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে লিখে নেওয়া যাক।

 নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখো:
তন্তু, নিসর্গ, অস্তিত্ব, ভারসাম্য, উজাড়, অর্কিড, ভেষজ।

উত্তর: প্রদত্ত শব্দ শব্দের অর্থ
তন্তু সুতা
নিসর্গ প্রকৃতি
অস্তিত্ব থাকার অবস্থা, বিদ্যমানতা
ভারসাম্য ভারের সমতা
উজাড় নিঃশেষ
অর্কিড পরগাছা, একজাতীয় ফুল
ভেষজ ওষুধের গুণসম্পন্ন গাছপালা
 বাক্য রচনা করো: স্লোগান, বনায়ন, প্লাইউড, অনিবার্য, পরিশোধন।
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ বাক্য রচনা
স্লোগান— বিশ্বের দেশে দেশে এখন পরিবেশ রক্ষার স্লোগান উঠেছে।
বনায়ন— বনায়ন কর্মসূচি পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক ফল দেবে।
প্লাইউড— আজকাল কাঠের বদলে প্লাইউডও ব্যবহূত হচ্ছে।
অনিবার্য— লোকটা অনিবার্য মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছে।
পরিশোধন— ঢাকায় পানি পরিশোধন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

 সঠিক উত্তরটি খাতায় লেখো।
(ক) গাছপালা বাতাস থেকে কী গ্রহণ করে?
অক্সিজেন/নাইট্রোজেন/কার্বন ডাই-অক্সাইড
উত্তর: কার্বন ডাই-অক্সাইড।
(খ) গাছপালা না থাকলে বাতাসের কোন উপাদান শেষ হয়ে যেত?
অক্সিজেন/কার্বন ডাই-অক্সাইড/নাইট্রোজেন।
উত্তর: অক্সিজেন।
(গ) খাদ্যশস্য কীসের প্রধান উৎস?
ভিটামিন/খনিজ উপাদান/শক্তি উত্তর: শক্তি।
(ঘ) সরিষা, নারকেল, বাদাম কোন জাতীয় খাদ্য?
ফল/তন্তু/তেল উত্তর: তেল
(ঙ) কী থেকে কফি ও কোকো তৈরি হয়?
লতা/ফল/বীজ উত্তর: বীজ
চ) কোনটি তন্তু উৎপাদনকারী গাছ?
মেহগনি/শাল/পাট
উত্তর: পাট।
ছ) কোনটি ভেষজ গুণসম্পন্ন?
গর্জন/সিঙ্কোনা/সেগুন
উত্তর: সিঙ্কোনা।
জ) ম্যালেরিয়ার ওষুধ কোনটি থেকে তৈরি হয়?
সিঙ্কোনা/আসাম লতা/কালমেঘ
উত্তর: সিঙ্কোনা।
ঝ) যেখানে গাছপালা ও বনভূমি বেশি, সেখানে কী হয়?
বৃষ্টি/খরা/ঝড় উত্তর: বৃষ্টি।
প্রশ্ন: বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যের তিনটি করে নাম লেখো?
(ক) ফল-জাতীয় খাদ্য (খ) শাকসবজি-জাতীয় খাদ্য (গ) শস্য-জাতীয় খাদ্য (ঘ) চিনি-জাতীয় খাদ্য (ঙ) বাদাম-জাতীয় খাদ্য (চ) তেল-জাতীয় খাদ্য (ছ) মসলা-জাতীয় খাদ্য (জ) পানীয় জাতীয় খাদ্য (ঝ) প্রাণিজ জাতীয় খাদ্য।
উত্তর: বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যের তিনটি করে নাম নিচে লেখা হলো:
(ক) ফল-জাতীয় খাদ্য: (১) আম, (২) জাম, (৩) কাঁঠাল।
(খ) শাকসবজি-জাতীয় খাদ্য: (১) আলু, (২) শিম, (৩) পালংশাক।
(গ) শস্য-জাতীয় খাদ্য: (১) চাল, (২) ডাল, (৩) গম।
(ঘ) চিনি-জাতীয় খাদ্য: (১) আখ, (২) খেজুর, (৩) তাল।
(ঙ) বাদাম-জাতীয় খাদ্য: (১) চিনাবাদাম, (২) কাজুবাদাম, (৩) আখরোট।
(চ) তেল-জাতীয় খাদ্য: (১) সরিষা, (২) সূর্যমুখী, (৩) জলপাই।
(ছ) মসলা-জাতীয় খাদ্য: (১) মরিচ, (২) কালিজিরা, (৩) হলুদ।
(জ) পানীয় জাতীয় খাদ্য: (১) চা, (২) কফি, (৩) কোকো।
(ঝ) প্রাণিজ জাতীয় খাদ্য: (১) গরুর মাংস, (২) হাঁসের মাংস, (৩) মুরগির মাংস।
প্রশ্ন: গাছপালা না থাকলে আমাদের কী অবস্থা হতো?
উত্তর: গাছপালা আমাদের পরম বন্ধু। গাছপালা ছাড়া পৃথিবীতে আমাদের জীবন অচল। বাতাসে শ্বাস নিতে না পারলে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য। বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে আমরা বাঁচি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমরা কার্বন ডাই-অক্সাইড নামে বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে ছাড়ি। আর গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে ও বাতাসে অক্সিজেন ছাড়ে। গাছপালা না থাকলে একসময় বাতাসের অক্সিজেন একেবারে শেষ হয়ে যেত। আর আমরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তাম।
মানুষের বন্ধু গাছপালা
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের পড়াশোনায়। আজ তোমাদের জন্য রয়েছে বাংলা বিষয়ের প্রবন্ধ ‘মানুষের বন্ধু গাছপালা’। ড. মাহবুবুল হক রচিত মানুষের বন্ধু গাছপালা প্রবন্ধে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে গাছপালার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
 সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
প্রশ্ন: গাছপালা আমাদের কী কী ধরনের খাদ্যের জোগান দেয়?
উত্তর: জীবন ধারণের জন্য খাদ্যের একান্ত প্রয়োজন। গাছপালা খাবার সরবরাহ করে ও আমাদের জীবন বাঁচায়। গাছপালা আমাদের নানা রকম খাদ্যের জোগান দেয়। গাছপালার জোগান দেওয়া এসব খাদ্যের মধ্যে রয়েছে নানা রকম ফল, শাকসবজি, খাদ্যশস্য, চিনি, বাদাম ও তেল।
প্রশ্ন: বাদামজাতীয় খাদ্য কোনগুলো?
উত্তর: গাছপালার জোগান দেওয়া খাদ্যের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য খাদ্য হলো বাদামজাতীয় খাদ্য। বাদামজাতীয় খাদ্যগুলো হলো: চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তা ইত্যাদি।
প্রশ্ন: চিনি বা শর্করাজাতীয় খাদ্য কোন কোন গাছ থেকে পাওয়া যায়?
উত্তর: আমাদের প্রাত্যহিক খাদ্যতালিকায় চিনি বা শর্করা জাতীয় খাদ্যের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই চিনি বা শর্করা জাতীয় খাদ্যও আমরা পেয়ে থাকি বিভিন্ন রকমের গাছপালা থেকে। যেসব গাছ থেকে চিনি বা শর্করা জাতীয় খাদ্য পাওয়া যায় সেসব গাছ হলো—আখ, খেজুর, তাল ইত্যাদি।
প্রশ্ন: কোন কোন উদ্ভিদের বীজ বা মণ্ড থেকে আমরা তেল পাই?
উত্তর: গাছপালা বা উদ্ভিদের ওপর আমরা নানাভাবে নির্ভরশীল। অক্সিজেন সরবরাহ করা ছাড়াও গাছপালা বা উদ্ভিদ আমাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে। আমাদের প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় তেল একটি অপরিহার্য বস্তু। এই তেলজাতীয় খাবারও আমরা পেয়ে থাকি উদ্ভিদ বা গাছপালা থেকে। যেসব উদ্ভিদের বীজ বা মণ্ড থেকে আমরা তেল পাই সেসব উদ্ভিদ হলো সরিষা, নারকেল, তিল, বাদাম, সূর্যমুখী, সয়াবিন, জলপাই ইত্যাদি।
প্রশ্ন: উদ্ভিদ থেকে আমরা কী কী মসলা পাই?
উত্তর: উদ্ভিদ আমাদের পরম উপকারী বন্ধু। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু দরকার তার প্রায় সবকিছুই আমরা উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি। এমনকি আমাদের খাদ্যদ্রব্য তৈরির উপাদান—উপকরণ মসলাও আমরা পেয়ে থাকি উদ্ভিদ থেকে। উদ্ভিদ থেকে আমরা যে যে মসলা পাই, তা হলো মরিচ, কালোজিরা, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, ধনে, তেজপাতা, এলাচি, দারচিনি, গোলমরিচ ইত্যাদি।
প্রশ্ন: মানুষ ছাড়া আর কারা গাছপালার ওপর নির্ভরশীল?
উত্তর: গাছপালা শুধু মানুষেরই পরম বন্ধু নয়, অন্যান্য প্রাণীও গাছপালার ওপর নির্ভরশীল। মানুষ ছাড়া আর যারা গাছপালার ওপর নির্ভরশীল, তারা হলো গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি। অর্থাৎ মাংস হিসেবে আমরা যেসব প্রাণিজ খাদ্য খাই সেসব প্রাণীও খাদ্যের জন্য গাছপালার ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন: আসবাবপত্র তৈরিতে সাধারণত কী কী বৃক্ষের কাঠ ব্যবহূত হয়?
উত্তর: আমাদের জীবনে গাছপালার অনেক অবদান রয়েছে। সেই আদিমকাল থেকে ঘরবাড়ি তৈরির কাজে মানুষ গাছপালা ব্যবহার করে আসছে। শুধু তাই নয়, ঘরের আসবাবপত্র তৈরিতেও গাছাপালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসবাবপত্র তৈরিতে সাধারণত যেসব বৃক্ষের কাঠ ব্যবহূত হয় সেগুলো হলো, মেহগনি, সেগুন, শাল, গর্জন ইত্যাদি।
প্রশ্ন: তুলা ও পাট কোন ধরনের গাছ?
উত্তর: প্রকৃতি জগতে অনেক রকমের গাছ রয়েছে। একেক ধরনের গাছ আমাদের একেক কাজে লেগে থাকে। তুলা ও পাট এক বিশেষ ধরনের গাছ। তন্তু বা সুতা উৎপাদনকারী গাছ হিসেবে তুলা ও পাট বহুল পরিচিত।
 সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
প্রশ্ন: কয়েকটি ভেষজ উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: ‘ভেষজ’ কথাটির অর্থ হলো ওষুধের গুণসম্পন্ন গাছপালা। উদ্ভিদ জগতে কিছু গাছপালা আছে সেগুলোকে আমরা ভেষজ উদ্ভিদ বলে থাকি। সেগুলোর লতা-পাতা, ছাল, কিংবা শিকড় ওষুধ তৈরিতে ব্যবহূত হয়। যেমন, সিনকোনাগাছ ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুইনাইন তৈরির কাজে লাগে। এ ছাড়া কালোমেঘ, নয়নতারা, আসামলতা, শ্বেতচন্দন ইত্যাদি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ।
প্রশ্ন: কুইনাইন তৈরি হয় কোন গাছ থেকে?
উত্তর: কুইনাইন হলো ম্যালেরিয়া রোগের ওষুধ। এই ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ভেষজ উদ্ভিদ। যে ভেষজ উদ্ভিদ বা গাছ থেকে কুইনাইন তৈরি হয়, তার নাম হচ্ছে সিনকোনাগাছ।
প্রশ্ন: চন্দন বৃক্ষ কী জন্য বিখ্যাত?
উত্তর: মানব জীবনে বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। শুধু অক্সিজেন সরবরাহ, খাদ্য জোগান কিংবা ওষুধ তৈরিতে নয়, অঙ্গ সৌন্দর্য ও সৌরভের জন্যও বৃক্ষ আমাদের কাজে লাগে। চন্দন সে রকম একটি বৃক্ষ। অঙ্গ সৌন্দর্য ও সৌরভের জন্য চন্দন বৃক্ষ বিখ্যাত।
প্রশ্ন: আজকের দিনে পরিবেশ রক্ষার স্লোগান কী?
উত্তর: মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে গাছের জুড়ি নেই। শুধু অক্সিজেন সরবরাহ, খাদ্যের জোগান, ওষুধ তৈরি কিংবা সৌন্দর্যবর্ধনই নয়, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে বায়ুমণ্ডলকে বিশুদ্ধ ও শীতল রাখতেও বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম। গাছপালা না থাকলে পরিবেশ উষ্ণ হয়ে উঠত। পৃথিবী হয়ে উঠত মরুভূমি। মানুষের অস্তিত্ব হতো বিপন্ন। তাই আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্য গাছপালার কোনো বিকল্প নেই। আমরা গাছ লাগাব এবং পরিবেশ রক্ষায় সহায়তা করব। এই আন্তরিক লক্ষ্যে আজকের দিনে পরিবেশ রক্ষার স্লোগান হচ্ছে, ‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’।
প্রশ্ন: মানুষ ও গাছপালা বাতাস থেকে কী গ্রহণ করে আর কী ত্যাগ করে?
উত্তর: বাতাসে শ্বাস নিতে না পারলে মানুষের মৃত্যু অনিবার্য। বাতাস থেকে মানুষ অক্সিজেন গ্রহণ করে আর নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানুষ কার্বন ডাই-অক্সাইড নামের বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে ত্যাগ করে। অন্যদিকে গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে আর বাতাসে অক্সিজেন ছাড়ে বা ত্যাগ করে।
প্রশ্ন: গাছপালা থেকে আমরা কী কী ফল পাই? শরীর রক্ষায় এগুলো কীভাবে আমাদের সাহায্য করে?
উত্তর: গাছপালা নানাভাবে আমাদের কাজে লাগে। অনেকভাবে আমাদের সাহায্য করে থাকে। গাছপালা আমাদের নানা রকম খাদ্যের জোগানদার। এসব খাদ্যের মধ্যে খাদ্যশস্য, চিনি, বাদাম, তেল ও শাকসবজি ছাড়াও রয়েছে নানা রকম ফল। গাছপালা থেকে আমরা যে যে ফল পাই, তা হলো—আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেয়ারা, লিচু, আতা, বরই, জামরুল, পেঁপে, সফেদা, আপেল, নাশপাতি, আনারস, আমড়া ইত্যাদি।
এসব ফল থেকে আমরা প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান পেয়ে থাকি। এগুলো শরীর গঠনে এবং রোগবালাই থেকে শরীর রক্ষায় আমাদের সহায়তা করে।
প্রশ্ন: কোন কোন খাদ্যশস্য আমাদের শরীরে শক্তির প্রধান উৎস? সেগুলো আমরা কী কী খাবার হিসেবে খাই?
উত্তর: গাছপালা আমাদের নানা রকম খাদ্যের জোগানদার, এসব খাদ্যের মধ্যে রয়েছে নানা রকম ফল, শাকসবজি, চিনি, বাদাম, তেল ও খাদ্যশস্য। এর মধ্যে চাল, ডাল, গম যব ইত্যাদি খাদ্যশস্য আমাদের শরীরে শক্তির প্রধান উৎস। এগুলো আমরা ভাত, রুটি, ছাতু, পাউরুটি, পরোটা, পিঠে, পায়েস ইত্যাদি খাবার হিসেবে খাই।
প্রশ্ন: ঘরবাড়ি তৈরিতে গাছপালা কীভাবে কাজে লাগে?
উত্তর: আমাদের জীবনে গাছপালা অনেক কাজে লাগে। সেই আদিমকাল থেকে ঘরবাড়ি তৈরির কাজে মানুষ গাছপালা ব্যবহার করে আসছে। ঘরের খুঁটি, বেড়া, চাল, তৈরিতে একসময় গাছপালার ব্যবহার অপরিহার্য ছিল। বর্তমান সময়ও গৃহনির্মাণ সামগ্রী হিসেবে গাছ তথা গাছ থেকে প্রাপ্ত কাঠ ব্যবহূত হয়।
প্রশ্ন: বসতবাড়ির শোভাবর্ধন করে এবং উদ্যান রচনার কাজে ব্যবহূত হয় এমন কিছু গাছপালার নাম লেখো।
উত্তর: বসতবাড়ির শোভাবর্ধন ও উদ্যান রচনায়ও গাছের জুড়ি নেই। বসতবাড়ির শোভাবর্ধন করে এবং উদ্যান রচনার কাজে ব্যবহূত হয় এমন কিছু গাছ হলো—চন্দ্রমল্লিকা, জিনিয়া, গাঁদা, দোপাটি, করবি, চাঁপা, কাঁঠালিচাঁপা, জবা, রজনীগন্ধা, গোলাপ, জুঁই ইত্যাদি ফুল। এ ছাড়া নানা রকমের অর্কিড ও পাতাবাহারগাছ পরিবেশকে শোভন ও সুন্দর করে।
প্রশ্ন: প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গাছপালা কী ভূমিকা পালন করে?
উত্তর: প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গাছপালা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বৃক্ষ ও বনভূমি বায়ুমণ্ডলকে বিশুদ্ধ ও শীতল রাখতে সাহায্য করে। যেখানে গাছপালা ও বনভূমি বেশি, সেখানে ভালো বৃষ্টি হয়। এর ফলে ভূমিতে পানির পরিমাণ বাড়ে, চাষাবাদ ও ফসল ভালো হয়। তা ছাড়া গাছপালা মাটির উর্বরতা বাড়ায়, মাটির ক্ষয়রোধ করে। ঝড়, বৃষ্টি ও বন্যা প্রতিরোধে গাছপালা সহায়তা করে। গাছপালা না থাকলে পরিবেশ উষ্ণ হয়ে উঠত। পৃথিবীও হয়ে উঠত মরুভূমি, মানুষের অস্তিত্বও বিপন্ন হয়ে পড়ত। গাছপালা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করছে বলেই আমরা পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারছি।
বাক্য রচনা করো: রোগবালাই, শাকসবজি, খাদ্যশস্য, মুখরোচক, ডালপালা, আসবাবপত্র, বায়ুমণ্ডল, বনায়ন, সহায়তা।

উত্তর:
প্রদত্তশব্দ বাক্য রচনা
রোগবালাই—ভিটামিন ও খনিজ উপাদান আমাদের শরীর গঠনে এবং রোগবালাই থেকে শরীর রক্ষায় সহায়তা করে।
শাকসবজি—শাকসবজি থেকে আমরা নানা খাদ্য-উপাদান পেয়ে থাকি।
খাদ্যশস্য—চাল, ডাল, গম, যব ইত্যাদি খাদ্যশস্য আমাদের শক্তির প্রধান উৎস।
মুখরোচক—চা, কফি, কোকো ইত্যাদি মুখরোচক পানীয় আমরা উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি।
ডালপালা—একসময় গাছের ডালপালা মানুষের মানুষের প্রয়োজনীয় জ্বালানি ছিল।
আসবাবপত্র—সেগুন বৃক্ষের কাঠ দিয়ে তৈরি আসবাবপত্র সবচেয়ে সুন্দর ও মজবুত।
বায়ুমণ্ডল—বৃক্ষ ও বনভূমি বায়ুমণ্ডলকে বিশুদ্ধ ও শীতল রাখে।
বনায়ন—দেশের সর্বত্র এখন বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সহায়তা—আমরা গাছ লাগাব এবং পরিবেশ রক্ষায় সহায়তা করব।

No comments:

Post a Comment