2.9.11

মহাস্থানগড়ে একদিন

প্রশ্ন : মহাস্থানগড় বগুড়া শহর থেকে কত দূরে?
উত্তর : ‘মহাস্থানগড়ে একদিন’ লেখক মনসুর মুসার একটি সুন্দর গল্প। এই গল্পটিতে লেখক বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান মহাস্থানগড়ের বর্ণনা দিয়েছেন।
মহাস্থানগড় বগুড়া জেলায় অবস্থিত। এটি বগুড়া শহর থেকে আট মাইল উত্তরে অবস্থিত। এই শহরটি প্রাচীর ঘেরা। মহাস্থানগড়ের প্রাচীন নাম ছিল পুণ্ড্রনগর। পুণ্ড্রবর্ধনকে পুণ্ড্রনগরও বলা হয়। এটি ছিল প্রাচীন বাংলার অন্যতম প্রাচীন নগর।
প্রশ্ন : মহাস্থানগড় জাদুঘরের পাশে কী আছে?
উত্তর : লেখক মনসুর মুসা ‘মহাস্থানগড়ে একদিন’ গল্পে বগুড়া জেলার পত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন।
এই বর্ণনার মধ্যে আমরা মহাস্থানগড়ের জাদুঘরের বর্ণনা পাই। মহাস্থানগড়ের জাদুঘরের পাশেই রয়েছে গোবিন্দ ভিটা। গোবিন্দা ভিটা একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এখানে রয়েছে টিলার মতো উঁচু জায়গা। মাটির ঢিবি খুঁড়ে বের করা হয়েছে প্রাচীন যুগের স্থাপত্য।
মহাস্থানগড়ের অনেকগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এর মধ্যে গোবিন্দ ভিটা একটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন নিদর্শন।
প্রশ্ন : প্রাচীন বাংলার অন্যতম প্রাচীন নগরের নাম কী?
উত্তর : লেখক মনসুর মুসা ‘মহাস্থানগড়ে একদিন’ গল্পে মহাস্থানগড়ের অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের বর্ণনা দেন। এর সাথে সাথে মহাস্থানগড়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অন্যান্য নিদর্শনের বর্ণনাও দেন।
প্রাচীন বাংলার অন্যতম প্রাচীন নগরের বর্তমান নাম মহাস্থানগড় হলেও এর প্রাচীন নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন। পুণ্ড্রবর্ধনকে ঐতিহাসিকভাবে পুণ্ড্রনগরও বলা হয়।
প্রশ্ন : পুণ্ড্রবর্ধনকে আর কী বলা হয়?
উত্তর : বগুড়া শহর থেকে আট মাইল উত্তরে প্রাচীর ঘেরা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের কথা জানতে পারি। এর বর্তমান নাম মহাস্থানগড়।
গল্পের প্রত্নতত্ত্বের ছাত্রী অঞ্জনার কথায় জানতে পারি যে মহাস্থান গড়ের প্রাচীন নাম পুণ্ড্রবর্ধনকে ঐতিহাসিকভাবে পুণ্ড্রনগর বলা হতো।
প্রশ :  প্রাচীন নগরীতে কী কী ছিল?
উত্তর : লেখক মনসুর মুসা তার রচিত ‘মহাস্থানগড়ে একদিন’ গল্পে বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড়ের কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এই প্রাচীন শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়েও আলোচনা করেছেন।
লেখকের গল্পে আমরা দেখতে পাই বর্তমানে মহাস্থানগড় জনমানবশূন্য বিস্তীর্ণ এলাকা। কিন্তু এখানে একদিন রাজা ছিল, রানী ছিল, রাজকন্যা ছিল; ছিল মন্ত্রী, পাত্র-মিত্র, অমাত্য, সেনাবাহিনী, প্রহরী, দ্বাররক্ষক। হাতিশালে হাতি ছিল, ঘোড়াশালে ছিল ঘোড়া। করতোয়া ছিল তীব্র গতিসম্পন্ন বিশাল নদী। করতোয়ার ঘাটে নৌকা ভিড়ত। দেশ-বিদেশের বণিকেরা ব্যবসা করতে আসত। তীর্থযাত্রীরা আসত। আসত পর্যটকেরা। জনকোলাহলে মুখরিত ছিল এই প্রাচীন শহর।
বর্তমানে এই শহর এখন আর কোলাহলপূর্ণ নেই। কালের সাক্ষী হয়ে নীরবে শুধু দাঁড়িয়ে আছে।
প্রশ্ন : জলাধার দুটোর নাম কী?
উত্তর : মহাস্থানগড় হল ইতিহাসের স্বর্ণপুরী। এর ধাপে ধাপে আমাদের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়। তেমনি দুটি জলাধারের অস্তিত্বও এখানে পাওয়া যায়। এ জলাধার দুটি হল-
১। জীয়ত কুণ্ড বা জীবন কূপ
২। মানকলির কুণ্ড।
লোকশ্রুতি আছে জীয়ত কুণ্ডের পানি খেলে মৃতব্যক্তি প্রাণ ফিরে পেত। আবার মানকলির কুণ্ড সম্বন্ধে বলা হয়, এর নাম হয়েছে জৈনধর্ম প্রচারক গোশালা মানকলির নাম অনুসারে।
প্রশ্ন : কে কে মহাস্থানগড়ের দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন?
উত্তর : আমাদের দেশের ইতহাসের স্বর্ণপুরী মহাস্থানগড়ের ধাপে ধাপে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন চাপা পড়ে ছিল। ধ্বংসাবশেষ খনন করে পাওয়া গেছে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এ সম্বন্ধে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বুকানন হ্যামিলটন ও আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম।
প্রশ্ন : ধ্বংসাবশেষ থেকে কী কী নির্দশন পাওয়া গেছে?
উত্তর : ইতিহাসের স্বর্ণপুরী মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষ থেকে সভ্যতার বহু নিদর্শন পাওয়া গেছে, যার বর্ণনা রয়েছে মনসুর মুসা রচিত ‘মহাস্থানগড়ে একদিন’ গল্পটিতে।
ধ্বংসাবশেষ খনন করে এখানে জৈন ধর্মের কিছু নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও এখানে আছে বৌদ্ধ ধর্মের নিদর্শন, হিন্দু ধর্মের নিদর্শন আর ইসলামি সভ্যতার নিদর্শন। প্রাচীন নগরী পুণ্ড্রবর্ধনে এ দেশের সভ্যতার বিচিত্র উপাদান সঞ্চিত আছে। এখানে শিলালিপি পাওয়া গেছে, ভগ্ন জৈনমূর্তি পাওয়া গেছে, বুদ্ধমূর্তি পাওয়া গেছে, অলঙ্কৃত ইট পাওয়া  গেছে, ধাতুর তৈরি একটি চক্র বা সূর্য, একটা ষাঁড়, একটা বাঘ, একটা ঘোড়া, একটি সিংহ এবং আরও অনেক কিছু পাওয়া গেছে।
এসব নিদর্শন মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা লেখ :
প্রশ্ন : এর ধাপে ধাপে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন চাপা পড়ে ছিল।
উত্তর : আলোচ্য অংশটুকু লেখক মনসুর মুসা রচিত ‘মহাস্থানগড়ে একদিন’ গল্প থেক নেওয়া হয়েছে।
প্রাচীন নগরী মহাস্থানগড় প্রাচীন নিদর্শনের এক অনন্য সুন্দর স্বপ্নপুরী। এর ঐতিহাসিক নাম ছিল পুণ্ড্রনগর। মহাস্থানগড় যে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনে ভরপুর তা আমরা গল্পে লেখক ও দুজন সঙ্গীর ধারাবর্ণনার মাধ্যমে জানতে পারি। এই প্রাচীন নগরীর এই সকল নিদর্শন সম্বন্ধে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বুকানন হ্যামিলটন আর আলেকজান্ডার ক্যানিংহাম।
তারা বুঝতে পেরেছিলেন মহাস্থানগড় ইতিহাসের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। এ সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ খনন করে বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের গর্বিত মালিক হয়েছে। তাই আবির যথার্থই বলেছেন যে, এর ধাপে ধাপে আমাদের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন চাপা পড়ে ছিল।
মূলত মহাস্থান গড় প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের এক অনন্য সুন্দর স্বপ্নপুরী।

বন্ধনীর ( ) মধ্য থেকে সঠিক অংশটুকু বেছে নিয়ে ড্যাশ (-) চিহ্নের ওপর বসিয়ে বাক্য
পূরণ কর :
১. পরশুরামের বাড়ি আছে-
(বৈরাগী ভিটায়/ খোদার পাথরভিটায়/ মানকলির কুণ্ডের মধ্যে)
উত্তর : মানকলির কুণ্ডের মধ্যে।
২. আবির ছিল-
(বিজ্ঞানের ছাত্র/ ভূগোলের ছাত্র/ ইতিহাসের ছাত্র)
উত্তর : ইতিহাসের ছাত্র।
৩. গোবিন্দ ভিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত-নদী।
(আত্রাই/পদ্মা/করতোয়া)
উত্তর : করতোয়া।
৪. সমতল ভূমি থেকে মহাস্থানগড়ের প্রাচীরের উচ্চতা প্রায়-
(৪.৫ মি./৩.৫৭ মি./৪.৭৫ মিটার)।
উত্তর : ৪.৭৫ মিটার।
৫. মহাস্থানগড়ের জাদুঘরের পাশেই আছে-
(সত্যপীর ভিটা/জীয়তকুন্ড/গৌবিন্দ ভিটা)
উত্তর : গোবিন্দ ভিটা।
৬. মহাস্থানগড় বগুড়া শহর থেকে-
(ছয় মাইল/সাত মাইল/আট মাইল উত্তরে)
উত্তর : আট মাইল উত্তরে।
যুক্তবর্ণ ব্যবহার করে
শব্দগঠন কর :
শ্ম-রশ্মি, শ্মশান
ত্ত্ব-প্রত্নতাত্ত্বিক, মহত্ত্ব
জ্জ্ব-উজ্জ্বল, প্রোজ্জ্বল
ম্ব-সম্বন্ধ, অম্বল
জ্ঞ-জিজ্ঞাসা, জ্ঞানবান
ষ্ট-কৃষ্টি, অষ্ট

No comments:

Post a Comment