2.6.12

সমাজ: অধ্যায়- ৭

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য পরিবেশ পরিচিতি সমাজ থেকে ধারাবাহিকভাবে অধ্যায়ভিত্তিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আলোচনা করা হচ্ছে।
 সঠিক শব্দ নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো।
ক) রাষ্ট্রে নাগরিক হিসেবে আমরা সামাজিক, — অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করি।
উত্তর: রাষ্ট্রে নাগরিক হিসেবে আমরা সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করি।
খ) নাগরিককে রাষ্ট্রের প্রতি কিছু , — ও কর্তব্য পালন করতে হয়।
উত্তর: নাগরিককে রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়।
গ) ভোট দেওয়ার অধিকার নাগরিকের — অধিকার।
উত্তর: ভোট দেওয়ার অধিকার নাগরিকের সর্বশ্রেষ্ঠ অধিকার।
ঘ) ভোটাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ— অধিকার।
উত্তর: ভোটাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অধিকার।
ঙ) নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হলে—দেখা দিতে পারে।
উত্তর: নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
 প্রশ্ন: নিচের শুদ্ধ উক্তিগুলোর ডান পাশে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ উক্তিগুলোর ডান পাশে ‘অ’ লেখো:
ক) বাংলাদেশে ১৫ বছর বয়স হলে ভোট দেওয়া যায়।— ‘অ’
খ) নাগরিক রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে।— ‘শু’
গ) বিদেশির ভোটাধিকার রয়েছে।— ‘অ’
ঘ) শিক্ষা লাভের অধিকার রাজনৈতিক অধিকার।— ‘অ
ঙ) নাগরিকের সর্বশ্রেষ্ঠ অধিকার হলো ভোটাধিকার।— ‘শু’
 প্রশ্ন: বাঁ পাশের কথাগুলোর সঙ্গে ডান পাশের কথাগুলোর মিল করো।
 উত্তর: ক) আইনের চোখে সবাই সমান সামাজিক অধিকার
খ) নিয়মিত কর দেওয়া আমাদের কর্তব্য
গ) ভোটাধিকার নেই উন্মাদ
ঘ) ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার রাজনৈতিক অধিকার
ঙ) জীবিকা নির্বাহের অধিকার অর্থনৈতিক অধিকার
 প্রশ্ন: সঠিক উত্তরটি লেখো।
১) নাগরিকের প্রথম কর্তব্য কী?
ক) আইন মানা খ) আনুগত্য গ) কর প্রদান ঘ) ধর্মীয় সহিষ্ণুতা
উত্তর: আনুগত্য।
২) বাংলাদেশে কমপক্ষে কত বছর বয়স হলে নাগরিক ভোট দিতে পারে?
ক) ২২ খ) ২০ গ) ১৮ ঘ) ১৬। উত্তর: ১৮।
৩) কোনটি নাগরিকের সামাজিক অধিকার?
ক) ভোট দেওয়ার অধিকার খ) ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার
গ) জীবিকা নির্বাহের অধিকার ঘ) সম্পত্তি ভোগের অধিকার।
উত্তর: সম্পত্তি ভোগের অধিকার।
৪) সচেতনভাবে প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে কী বলে?
ক) নির্বাচন খ) সামাজিক অধিকার
গ) ভোটাধিকার ঘ) অর্থনৈতিক অধিকার।
উত্তর: নির্বাচন।
৫) কোনটি নাগরিকের কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত?
ক) ভোট দেওয়া খ) কাজ করা গ) আইন মেনে না চলা
ঘ) মতামত প্রকাশ করা
উত্তর: আইন মেনে না চলা।
 প্রশ্ন: সংক্ষেপে উত্তর দাও।
ক) নাগরিক কাকে বলে?
উত্তর: নাগরিক হলো তারা, যারা রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকে। রাষ্ট্রের কল্যাণ কামনা করে। রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে। বিশ্বের সব মানুষ কোনো না কোনো দেশের নাগরিক। আমাদের জন্ম বাংলাদেশে। তাই আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
খ) নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে কী কী অধিকার ভোগ করে?
উত্তর: নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। এসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা আমাদের নাগরিক অধিকার। নিচে নাগরিকের রাষ্ট্রীয় অধিকার উল্লেখ করা হলো—
১) নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার।
২) নির্বাচিত হওয়ার অধিকার।
৩) রাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে বসবাসের অধিকার।
৪) বিদেশে অবস্থানকালে নিজ রাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা লাভের অধিকার।
৫) সরকারি চাকরি লাভের অধিকার।
৬) ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার।
৭) সরকারের সমালোচনা করার অধিকার।গ) নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকি এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করে থাকি। নিচে নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলো—
সামাজিক অধিকার : সামাজিক অধিকার নাগরিকের জীবন রক্ষার অধিকার দেয়। নিজের মতামত প্রকাশের অধিকার দেয়। রাষ্ট্রের সর্বত্র অবাধে চলাফেরার অধিকার, শিক্ষা লাভের অধিকার ও নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয়। আইনের চোখে সমান অধিকার দেয়। সম্পত্তি ভোগের অধিকার দেয়। 
রাজনৈতিক অধিকার: নাগরিকের নির্বাচিত হওয়ার অধিকার দেয়। সরকারের সমালোচনা করার অধিকার দেয়। রাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে বসবাসের অধিকার দেয়। সরকারি চাকরি লাভের অধিকার দেয়। ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার দেয়। বিদেশে অবস্থানকালে নিজ রাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা লাভের অধিকার দেয়। ভোট দেওয়ার অধিকার দেয়। 
ঘ) নাগরিকের কেন কর প্রদান করা উচিত? কর প্রদান না করলে কী হবে?
উত্তর: নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন অধিকার ভোগ করে। পাশাপাশি প্রতিটি নাগরিককে রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। দেশের শাসনকাজ পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য অর্থের প্রয়োজন। নাগরিকদের ওপর কর আরোপ করে রাষ্ট্র এই অর্থ সংগ্রহ করে। তাই রাষ্ট্রীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য নাগরিকের কর প্রদান করা উচিত। কর প্রদান না করলে অসুবিধা: নাগরিকেরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে যেরূপ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে, তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকেরও কিছু কর্তব্য পালন করতে হয়। নাগরিকদের জীবন সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য ও রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য রাষ্ট্রের অর্থের প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্র নাগরিকদের ওপর কর আরোপ করে অর্থ সংগ্রহ করে। তাই নিয়মিত কর প্রদান করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কর প্রদান না করলে রাষ্ট্রের শাসনকাজ পরিচালনা করতে অসুবিধা হবে এবং দেশের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটবে।
ঙ) সুষ্ঠু নির্বাচনে নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কী? নাগরিক এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
উত্তর: সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিম্নরূপ—
১) নির্বাচনের মাধ্যমে সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে।
২) প্রতিটি ভোটাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিককে ভোট দিতে হবে।
৩) সততার সঙ্গে সব নাগরিককে ভোট দিতে হবে।
৪) নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রণীত সব আইন মেনে চলতে হবে। 
৫) নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত সব আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।
নাগরিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সৃষ্ট সমস্যা: নির্বাচনে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবে যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন করা সম্ভব হয় না। এতে দেশের ক্ষতি হয়। তাই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য।

No comments:

Post a Comment