22.5.12

সমাজ: অধ্যায়-১

অধ্যায়-১
প্রিয় শিক্ষার্থী, আদর ও ভালোবাসা নিয়ো। ২০১১ সালের সমাপনী পরীক্ষার আলোকে আজ অধ্যায় এক-এর এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আলোচনা করছি।
প্রশ্ন: সংক্ষেপে উত্তর দাও।
ক) তোমার এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নাম লেখো।
উত্তর: আমার এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নাম নিচে দেওয়া হলো—
# রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণ।
# পুল, সাকো, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণ।
# ধর্মীয় স্থান, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সম্পদ সংরক্ষণ।
# গাছ লাগানো, পরিচর্যা এবং সামাজিক বনায়ন।
# এলাকার পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
# ঝোপঝাড়, পুকুরের কচুরিপানা ও ড্রেন পরিষ্কার করে মশা নিধনের ব্যবস্থা করা।
# নিরাপদ পানি পান সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করা।
# এলাকার পানি সরবরাহের উৎসের যত্ন নেওয়া।
# খাল খননের ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশন ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
# এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করা এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা।
# এলাকার লোকজনকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করা, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা ইত্যাদি।

খ) এলাকার রাস্তাঘাট ভালো না হলে কী অসুবিধা হতে পারে?
উত্তর: এলাকার রাস্তাঘাট ভালো না হলে নিচের অসুবিধাগুলো হতে পারে—
# আমাদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।
# মালামাল পরিবহনে অসুবিধা হয়।
# ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি ব্যাহত হয়।
সর্বোপরি আমাদের বসবাসের জন্য অসুবিধা হয়।
গ) এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা উচিত কেন?
উত্তর: সুন্দর, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সুন্দর পরিবেশ প্রয়োজন। পরিবেশের অন্যতম উপাদান হচ্ছে গাছ। গাছপালা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আমরা বৃক্ষ থেকে পেয়ে থাকি। জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন—খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান বৃক্ষ থেকে আসে। অনেক প্রয়োজনীয় ওষুধ বৃক্ষ থেকে পাওয়া যায়। বৃক্ষ মাটির ক্ষয়রোধ করে। প্রচণ্ড গরমে গাছের ছায়ায় আমরা একটু শীতল পরশ পাই। প্রয়োজনীয় গাছপালার অভাবে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, নির্বিচারে গাছপালা কাটার ফলে আমাদের দেশে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পরিবেশের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত গাছ কাটার ফলে দেশের আবহাওয়া ও ভূপ্রকৃতিতে মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। উপরিউক্ত বর্ণনা অনুযায়ী বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যার গুরুত্ব অপরিসীম।
ঘ) এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করা প্রয়োজন কী?
উত্তর: এলাকার লোকজনের স্বাস্থ্যকে নিরাপদ রাখতে হলে নিরাপদ পানি পান ও ব্যবহার করতে হবে। এ ব্যাপারে এলাকার সবাইকে সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব। পানি ফুটিয়ে পান করলে তা জীবনের জন্য নিরাপদ। তাই এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সবার কিছু কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সবার পালন করা উচিত এমন কিছু দায়িত্ব নিচে তুলে ধরা হলো— ১. আমাদের চলাচলের রাস্তা যদি ভাঙা হয়, এতে যদি গর্ত থাকে তাহলে আমাদের সবার উচিত রাস্তা মেরামত করা এবং গর্ত ভরাট করা।
২. আমাদের চলাচলের রাস্তায় যদি ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকে, তবে আমাদের উচিত ঢাকনার ব্যবস্থা করা। তা না করা হলে মারাত্মক কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
৩. পুল, সাকো, সেতু, কালভার্ট ইত্যাদি নষ্ট থাকলে এগুলো ঠিক করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. গাছ লাগাতে হবে, পরিচর্যা করতে হবে এবং সামাজিক বনায়নে আগ্রহী হতে হবে।
৫. পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৬. নিরাপদ পানি পান ও ব্যবহার সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
৭. খাল খনন করে পানি নিষ্কাশন ও সংরক্ষণের সুব্যবস্থা করতে হবে।
৮. নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
৯. বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ-পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রহণ করতে হবে।

চ) তোমার এলাকায় কিছু লোকের হাত ও পায়ের তালুতে চর্মরোগ দেখা যাচ্ছে—তোমার কী করা উচিত? সে সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: হাত ও পায়ের তালুতে এক ধরনের চর্মরোগ হওয়া মানেই আর্সেনিক আক্রান্ত হওয়া। আমাদের দেশে কোন কোন এলাকার পানিতে আর্সেনিক দূষণ দেখা দিয়েছে। আর্সেনিক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা মাটির নিচে থাকে। এটা পানির সঙ্গে মিশে পানিকে দূষিত করে। এই পানি নলকূপের মাধ্যমে উপরে উঠে আসে। এই আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে হাত ও পায়ের তালুতে এক ধরনের চর্মরোগ হয়। এই রোগ পরবর্তী সময়ে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
আমার যা করণীয় বা করা উচিত: আর্সেনিকযুক্ত পানি জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।
অতএব এ ধরনের পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য এলাকার লোকজনকে সচেতন করে তুলব। লাল রঙের চিহ্ন দেওয়া নলকূপের পানি আমরা নিজেরাও পান করব না এবং এলাকার লোকজনকেও আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে বলব।

No comments:

Post a Comment