কবিতা
হীরের চেয়েও অধিক খাঁটি-রবিউল হুসাইন
বইছে কেমন আপন মনে
গাছের পাতা দিচ্ছে দোলা
হিয়ার মাঝে সংগোপনে।
চতুর্দিকে খুশির আমেজ
মনের ভেতর সুখের পরশ
কীসের জন্যে এমন এখন
কী কারণে শরীর অবশ।
একটু পরেই বুঝতে পারি
আজ বাংলা স্বাধীন দিবস
একচল্লিশের যুবক সে যে
শক্ত কঠিন হৃদয়-মানস।
ভবিষ্যতের সামনে গিয়ে
উদ্বাহু ডাক সবার দিকে
দেয় ছড়িয়ে দিগি¦দিক
বাংলাদেশের স্বপ্নলোকে।
দেশের মানুষ দেশের মাটি
হীরের চেয়েও অধিক খাঁটি।
সূর্য আলোয় হেসে
পৃথি¦শ চক্রবর্ত্তী
৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেই
কাঁপে পাকিস্তানীর শাসন
অমানুষ ঐ ইয়াহিয়ার দিল্
ছিল না তাই, নকশা আঁকে নীল।
২৫শে মার্চ কৃষ্ণকালো রাতে
নানা রকম অস্ত্রশস্ত্র হাতে
পূর্ব বাংলায় দেয় তো তারা হানা
যা ছিল না বাঙালীর জানা।
গোটা জাতি দিশেহারা হয়
মনে বসে ভর করে সব ভয়।
২৬শে মার্চ তাইতো রাতারাতি
যুদ্ধে যাবার ঘোষণা পায় জাতি।
সেদিন থেকেই যুদ্ধ হল শুরু
কেঁপে ওঠে পূর্ববাংলা পুরু
পদ্মা-মেঘনা ছলাৎ ছলাৎ করে
জোয়ার আসে বঙ্গোপসাগরে।
এমন করেই যুদ্ধ নয় মাস শেষে
‘বাংলাদেশ’ হয় সূর্য আলোয় হেসে।
আমরা চেয়েছি
মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক
আমরা চেয়েছি একটি স্বাধীন
সবুজ শ্যামল মাঠ
ফুলে ফলে ভরা জীবনের জমি
বাঁধানো পুকুর ঘাট,
আমরা চেয়েছি মায়ের আঁচলে
নক্শির কারুকাজ
বাবার লাঙলে স্বর্গ আদলে
কোমল মাটির লাজ,
আমরা চেয়েছি আকাশের বুকে
শাস্ত সফেদ মেঘ
বাউলের মুখে গীতিময় সুরে
সাগরের গতিবেগ,
টিক্কা নামের নরাধম এক দম্ভের রথে চড়ে
আমাদের সব নিয়েছিল কেড়ে সেদিন একাত্তরে ॥
ভাঙবো অনিয়ম
আসলাম সানী
ভাঙতে হবে সকল বাঁধা
ভাঙবো অনিয়ম
অন্যায় আর অপকর্ম
মানবো না একদম,
ভাঙবো যতো প্রাসাদ ষড়যন্ত্র
নাগ-নাগিনীর অশুভ কুমন্ত্র
আনতে হবে জনগণতন্ত্র,
আনবো সুশাসন
গুড়িয়ে দেবো অত্যাচারীর
গদি ও আসন,
গড়বো জনগণের আশা
নির্যাতিতের মুখের ভাষা
মুটে-মজুর-জেলে-চাষার
হবে এদেশ ভাই
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে
আনলো এদেশটাই
বাংলাদেশের লক্ষ-কোটি
মুক্তিযোদ্ধা ভাই
স্বাধীনতার পতাকাতে
খুঁজে তাঁদের পাই
তাদের কথা নতুন দিনের
কাছে বলে যাই
সবারে জানাই ॥
একাত্তরের যুদ্ধকথা
আলম তালুকদার
স্বাধীন স্বাধীন মুক্তিযোদ্ধা ঐ তো ক্ষেপেছে
পাকিস্তানের দম্ভ কত সেটাও মেপেছে
দেশের মানুষ দেশের জন্য কষ্ট সয়েছে
যুদ্ধ করে যোদ্ধারা যে শহীদ হয়েছে
তাই তো দেখি ‘বাইটা’ ছেলে ‘খাইটা’ মেরেছে
পাকিস্তানের বড্ড লেগেছে।
স্বাধীন স্বাধীন স্বাধীনতা তাই তো এসেছে
ছেলেহারা মা জননী ঠিকই হেসেছে
রাজাকার ধরে ধরে কিমা করেছে
বীর বাঙালি জয়ের জন্য পাক্কু মেরেছে
কেচকি দিয়ে মুক্তিরা সব ভেংচি মেরেছে
এহিয়া খান তাই তো ভেগেছে
অবশেষে অন্ধকারে আলো জ্বলেছে
এসব কথা আমার কাছে নানু বলেছে।
No comments:
Post a Comment