21.3.12

বিজ্ঞান: অধ্যায়-৫ স্বাস্থ্যবিধি

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বিজ্ঞান বইয়ের অধ্যায়-৫ স্বাস্থ্যবিধি থেকে শূন্যস্থান পূরণ কর আলোচনা করব।
# শূন্যস্থান পূরণ করো:
প্রশ্ন: যেসব রোগজীবাণু পানির মাধ্যমে ছড়ায়, তাকে — রোগ বলে।
উত্তর: যেসব রোগজীবাণু পানির মাধ্যমে ছড়ায়, তাকে পানিবাহিত রোগ বলে।
প্রশ্ন: যেসব রোগজীবাণু বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়, তাকে — রোগ বলে।
উত্তর: যেসব রোগজীবাণু বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়, তাকে বায়ুবাহিত রোগ বলে।
প্রশ্ন: স্ত্রী — মশা ডেঙ্গু জীবাণুর বাহক।
উত্তর: স্ত্রী এডিস মশা ডেঙ্গু জীবাণুর বাহক।
প্রশ্ন: রোগজীবাণু বহনকারী স্ত্রী — মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়।
উত্তর: রোগজীবাণু বহনকারী স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়।
প্রশ্ন: একবার তৈরি স্যালাইন — ঘণ্টার বেশি খাওয়ানো যাবে না।
উত্তর: একবার তৈরি স্যালাইন ছয় ঘণ্টার বেশি খাওয়ানো যাবে না।
প্রশ্ন: মানবদেহে প্রবেশের পর আমাশয় জীবাণুর — ঘটে।
উত্তর: মানবদেহে প্রবেশের পর আমাশয় জীবাণুর বংশ বৃদ্ধি ঘটে।
প্রশ্ন: রক্তে পিত্তরসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে — হয়।
উত্তর: রক্তে পিত্তরসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে জন্ডিস হয়।
প্রশ্ন: গ্রামের চেয়ে শহরেই — রোগটি বেশি হয়।
উত্তর: গ্রামের চেয়ে শহরেই টাইফয়েড রোগটি বেশি হয়।
প্রশ্ন: পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচার প্রধান উপায় হলো
— পানি পান করা।
উত্তর: পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচার প্রধান উপায় হলো নিরাপদ পানি পান করা।
প্রশ্ন: যক্ষ্মা একটা মারাত্মক বায়ুবাহিত — রোগ।
উত্তর: যক্ষ্মা একটা মারাত্মক বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ।
প্রশ্ন: যক্ষ্মাকে — বা — বলা হয়।
উত্তর: যক্ষ্মাকে টিবি বা ক্ষয়রোগ বলা হয়।
প্রশ্ন: — কৃমি মানুষের অন্ত্রে বড় হয় ও ডিম পাড়ে।
উত্তর: গোল কৃমি মানুষের অন্ত্রে বড় হয় ও ডিম পাড়ে।
প্রশ্ন: কৃমি — প্রধান কারণ।
উত্তর: কৃমি অপুষ্টির প্রধান কারণ।
প্রশ্ন: — নামক জীবাণুর আক্রমণে বাতজ্বর হয়।
উত্তর: স্ট্রেপটোকক্কাস নামক জীবাণুর আক্রমণে বাতজ্বর হয়।
প্রশ্ন: — নামক এক বিশেষ ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে এইডস রোগ হয়।
উত্তর: এইচআইভি নামক এক বিশেষ ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে এইডস রোগ হয়।
প্রশ্ন: দাদ, খোসপাঁচড়া, বিখাউজ ইত্যাদি — রোগ।
উত্তর: দাদ, খোসপাঁচড়া, বিখাউজ ইত্যাদি ত্বকের রোগ।
প্রশ্ন: জন্মগতভাবে কেউ কানে শুনতে পায় না, এদের — বলে।
উত্তর: জন্মগতভাবে কেউ কানে শুনতে পায় না, এদের বধির বলে
প্রশ্ন: নাকে বেশি শ্লেষ্মা জমে থাকলে বড়দের — সমস্যা হতে পারে।
উত্তর: নাকে বেশি শ্লেষ্মা জমে থাকলে বড়দের সাইনাসের সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্ন: খাদ্য, পানি, ত্বক বা চামড়ার মধ্য দিয়ে — ডিম দেহের ভেতরে প্রবেশ করে।
উত্তর: খাদ্য, পানি, ত্বক বা চামড়ার মধ্য দিয়ে কৃমির ডিম দেহের ভেতরে প্রবেশ করে।
প্রশ্ন: ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে — ও — বেরিয়ে যায়।
উত্তর: ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়।

# সঠিক উত্তরটি খাতায় লিখো
প্রশ্ন: কোনটি বায়ুবাহিত রোগ?
ক) যক্ষ্মা খ) আমাশয় গ) জন্ডিস ঘ) কলেরা
উত্তর: ক) যক্ষ্মা।
প্রশ্ন: পূর্ণাঙ্গ গোল কৃমি মানবদেহের কোন অঙ্গে বাস করে?
ক) যকৃতে খ) কানে গ) অন্ত্রে ঘ) পাকস্থলীতে।
উত্তর: গ) অন্ত্রে।
প্রশ্ন: কোনটি পানিবাহিত রোগ?
ক) যক্ষ্মা খ) ইনফ্লুয়েঞ্জা গ) টাইফয়েড ঘ) হাম
উত্তর: গ) টাইফয়েড।
প্রশ্ন: কোনটি ছোঁয়াচে রোগ?
ক) বাতজ্বর খ) হাঁপানি গ) পাঁচড়া ঘ) রাতকানা।
উত্তর: গ) পাঁচড়া।
প্রশ্ন: চোখের কোন রোগটি ছোঁয়াচে?
ক) রাতকানা খ) চোখে ছানি পড়া গ) অঞ্জনি ঘ) চোখ ওঠা।
উত্তর: ঘ) চোখ ওঠা।
প্রশ্ন: কলেরা অথবা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে স্যালাইন খেতে দেওয়া হয় কেন?
ক) দেহের বৃদ্ধির জন্য খ) পায়খানা বন্ধ হওয়ার জন্য
গ) দেহে পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য
ঘ) বমি বন্ধ হওয়ার জন্য।
উত্তর: গ) দেহে পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য।
প্রশ্ন: দাঁত সুস্থ রাখার উপায় কী?
ক) নরম খাবার খাওয়া খ) প্রতিবার খাবারের পর দাঁত ব্রাশ করা গ) ভিটামিন বি-যুক্ত খাবার খাওয়া ঘ) অমিষ-জাতীয় খাবার খাওয়া।
উত্তর: খ) প্রতিবার খাবারের পর দাঁত ব্রাশ করা।
প্রশ্ন: কী কারণে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে?
ক) কানে ওষুধ দিলে খ) কানে ময়লা জমলে
গ) সর্দি হলে ঘ) কানের ওপর জোরে থাপড় দিলে।
উত্তর: ঘ) কানের ওপর জোরে থাপড় দিলে।
প্রশ্ন: নিচের কোনটি যকৃতের রোগ?
ক) কলেরা খ) টাইফয়েড গ) জন্ডিস ঘ) ডায়রিয়া
উত্তর: গ) জন্ডিস।
প্রশ্ন: স্যালাইন তৈরির উপাদান নয় কোনটি?
ক) পানি খ) খাবার লবণ গ) গুড় ঘ) লেবুর রস।
উত্তর: ঘ) লেবুর রস।
প্রশ্ন: রোগজীবাণু বহনকারী স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে কোন রোগ হয়?
ক) ম্যালেরিয়া খ) ডেঙ্গু গ) টাইফয়েড ঘ) ইনফ্লুয়েঞ্জা।
উত্তর: খ) ডেঙ্গু।
প্রশ্ন: হাম ও জলবসন্ত কোন ধরনের রোগ?
ক) চর্মরোগ খ) ক্ষয়রোগ গ) ছোঁয়াচে বা সংক্রামক
ঘ) বংশগত।
উত্তর: গ) ছোঁয়াচে বা সংক্রামক।

# শুদ্ধ অশুদ্ধ নির্ণয় করো:
১। টাইফয়েড, কলেরা, জন্ডিস ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ
— ‘অশুদ্ধ’
২। অনেক রোগজীবাণু কীটপতঙ্গের দংশনের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে — ‘শুদ্ধ’
৩। ডায়রিয়া একটি অন্যতম পানি ও খাদ্যবাহিত রোগ — ‘শুদ্ধ’
৪। আমাশয় পানিবাহিত রোগ — ‘শুদ্ধ’
৫। যক্ষ্মা কেবল ফুসফুসের রোগ — ‘অশুদ্ধ’
৬। যক্ষ্মার প্রতিষেধক হিসেবে শিশুদের বিসিজি টিকা দেওয়া হয় — ‘শুদ্ধ’
৭। শিশুরাই কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয় বেশি — ‘শুদ্ধ’
৮। গোল কৃমি মানুষের অন্ত্রে বাস করে — ‘শুদ্ধ’
৯। স্ট্রেপটোকক্কাস নামক জীবাণুর আক্রমণে বাতজ্বর হয় — ‘শুদ্ধ’
১০। এইডস ভাইরাসটির পুরো নাম হলো হিউম্যান ইমিউন ডেফিনিয়েন্সি, সংক্ষেপে এইচআইভি — ‘শুদ্ধ’
১১। ছোট শিশুরা দাঁতের ক্ষয়জনিত কারণে বেশি কষ্ট পায় — ‘শুদ্ধ’
১২। চোখ ওঠা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয় — ‘অশুদ্ধ’
১৩। চোখের যত্নের জন্য ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার খেতে হবে — ‘শুদ্ধ’
১৪। জন্ডিস একটি বায়ুবাহিত রোগ — ‘অশুদ্ধ’
১৫। টাইফয়েড এক প্রকার পানিবাহিত রোগ — ‘শুদ্ধ’
১৬। যক্ষ্মা দেহের যেকোনো স্থানে হতে পারে — ‘শুদ্ধ’
১৭। যক্ষ্মা বায়ুবাহিত রোগ — ‘শুদ্ধ’
১৮। দাঁত সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্রাশ করার দরকার নেই — ‘অশুদ্ধ’
১৯। রক্তে পিত্তরসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় যক্ষ্মা হয় — ‘অশুদ্ধ’
২০। টাইফয়েড গ্রামের চেয়ে শহরেই বেশি হয় — ‘শুদ্ধ’

# সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দাও:
প্রশ্ন: বায়ুবাহিত রোগ কাকে বলে? তিনটি বায়ুবাহিত রোগের নাম লেখো।
উত্তর: যেসব রোগের জীবাণু বায়ুর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তাদের বায়ুবাহিত রোগ বলে। এসব রোগের জীবাণু শ্বাস গ্রহণের সময় জীবদেহে প্রবেশ করে। তিনটি বায়ুবাহিত রোগের নাম হলো: ইনফ্লুয়েঞ্জা, বসন্ত ও যক্ষ্মা।
প্রশ্ন: পানিবাহিত রোগ কাকে বলে? তিনটি পানিবাহিত রোগের নাম লেখো।
উত্তর: যেসব রোগজীবাণু পানির মাধ্যমে ছড়ায়, তাকে পানিবাহিত রোগ বলে। তিনটি পানিবাহিত রোগের নাম হলো: টাইফয়েড, জন্ডিস ও ডায়রিয়া।
প্রশ্ন: মানুষ কীভাবে গোল কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়?
উত্তর: অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে কৃমি সহজে বিস্তার লাভ করে। গোলকৃমি অন্ত্রে ডিম পাড়ে। এ ডিম মলের সঙ্গে দেহের বাইরে আসে। ডিমগুলো ময়লা বা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। এ ডিমগুলো যখন খাবার বা পানির সঙ্গে মানুষের অন্ত্রে প্রবেশ করে, কেবল তখনই খোলস ত্যাগ করে লার্ভা বের হয়। যেসব উপায়ে কৃমির ডিম মানুষের অন্ত্রে প্রবেশ করে তা হলো—
১. হাত না ধুয়ে খাবার খেলে।
২. শাকসবজি ও ফলমূল না ধুয়ে খেলে।
৩. মলত্যাগের পর ও খাবার খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ভালো করে না ধুলে।
৪. নখ বড় থাকলে।
৫. লোকজন মলত্যাগ করে এমন জায়গায় খালি পায়ে হাঁটলে।
প্রশ্ন: জলবসন্ত রোগ কীভাবে ছড়ায়?
উত্তর: জলবসন্ত একপ্রকার বায়ুবাহিত রোগ। এ রোগ বায়ুবাহিত হওয়ার কারণে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। জলবসন্ত রোগীর সঙ্গে মেলামেশা করলে এ রোগ সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটি একটি সংক্রামক রোগ। কাজেই আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা করা উচিত নয়। একধরনের ভাইরাস এ রোগ সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন: চোখের তিনটি রোগের নাম লেখো। রাতকানা রোগ কেন হয়?
উত্তর: চোখের তিনটি রোগের নাম হলো—
১. চোখ ওঠা ২. চোখে অঞ্জলি হওয়া ৩. চোখে ছানিপড়া। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। তাই পাকা হলুদ ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।
প্রশ্ন: টাইফয়েড রোগ কীভাবে ছড়ায়?
উত্তর: টাইফয়েড পানিবাহিত সংক্রামক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর মলমূত্রের সঙ্গে জীবাণু বের হয়ে আসে এবং সেই জীবাণু পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়ে। খোলা, পচা, বাসি খাবার খেলেও টাইফয়েড হতে পারে।
প্রশ্ন: এইডস রোগের ভাইরাসটির নাম কী?
উত্তর: এইডস একটি মারাত্মক রোগ। এইডস রোগের ভাইরাসটির নাম হলো: হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস অর্থাৎ সংক্ষেপে এইচআইভি।

# রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর লিখ।
প্রশ্ন: ত্বকের যত্ন কীভাবে নিতে হয় লেখো।
উত্তর: ত্বক আমাদের দেহের পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত অংশ আবৃত করে রাখে। তাই ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজন।
১। ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার পানিতে সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে।
২। দাদ, খোসপাঁচড়া, চুলকানি ইত্যাদি ত্বকের প্রধান রোগ। নোংরা ত্বকে এগুলো বেশি হয়। এ রোগগুলো ছোঁয়াচে। তাই এ রোগে আক্রান্ত হলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যেকোনো মলম না জেনে ব্যবহার করা উচিত নয়।
প্রশ্ন: তুমি বাড়িতে স্যালাইন কীভাবে তৈরি করবে?
উত্তর: বাড়িতে বসে স্যালাইন তৈরি করতে উপকরণ লাগবে: একটি চা-চামচ, একটি পরিষ্কার পাত্র, খাবার লবণ, গুড় বা চিনি, ফুটানো ঠান্ডা পানি অথবা নলকূপের পানি।
স্যালাইন তৈরির পদ্ধতি
১) একটি পাত্রে আধা লিটার পরিমাণ ফুটানো ঠান্ডা পানি অথবা নিরাপদ নলকূপের পানি নিতে হবে।
২) এবার হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। পরিষ্কার হাতে এক মুঠো গুড় অথবা চিনি নিয়ে পানিতে দিতে হবে।
৩) তিন আঙুলের ডগা দিয়ে এক চিমটি লবণ ওই পানিতে মেশাতে হবে।
৪) এবার মিশ্রণটি চামচ দিয়ে নাড়তে হবে। এভাবে লবণ ও চিনি বা গুড় পানিতে গুলে লবণগুড়ের শরবত বা খাবার স্যালাইন বানানো যায়।
প্রশ্ন: দাঁতের যত্ন নেওয়ার উপায়গুলো বর্ণনা করো।
উত্তর: দাঁত মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। দাঁত দিয়ে আমরা খাবার চিবিয়ে খাই। অযত্ন ও অবহেলার কারণে দাঁতে নানা রকম অসুবিধা দেখা দেয়। এর মধ্যে দাঁত ক্ষয় হওয়া, মাড়ি ফোলা, দাঁত ব্যথা, দাঁতের গোড়ায় পুঁজ হওয়া অন্যতম।
নিম্নলিখিত উপায়ে দাঁতের যত্ন নেওয়া যায়—
১) নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত মাজতে হবে, ব্রাশ ও টুথপেস্ট এবং নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজা ভালো।
২) প্রতিবার খাওয়ার পর কুলকুচা করতে হবে, এতে দাঁতের ফাঁকে খাবার জমতে পারে না।
৩) মুখ ধোয়ার সময় মাড়ি আঙুল দিয়ে মাজতে হবে।
৪) চকলেট দাঁতের জন্য ক্ষতিকর, তাই চকলেট খাওয়ার পর শিশুদের অবশ্যই দাঁত পরিষ্কার করে দিতে হবে।
৫) দাঁতে ব্যথা হলে গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৬) দাঁতে বেশি অসুবিধা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৪। প্রশ্ন: চোখ ভালো রাখার উপায় কী কী?
উত্তর: চোখ দিয়ে আমরা দেখি। অন্ধ ব্যক্তি এই সুন্দর পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পায় না। তাই চোখের যত্ন অবশ্যই নিতে হবে। চোখ ভালো রাখার উপায়গুলো হলো—
১) দিনে কয়েকবার পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে।
২) চোখে কাজল বা সুরমা ব্যবহার করলে তা মানসম্মত হতে হবে।
৩) ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার খেতে হবে।
৪) অন্যের সানগ্লাস, রুমাল, গামছা বা তোয়ালে ব্যবহার করা উচিত নয়।
৫) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া চোখে কোনো ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়।

প্রশ্ন: জন্ডিস রোগীর যত্ন কীভাবে নিতে হয় লেখো।
উত্তর: জন্ডিস পানিবাহিত একটি যকৃতের রোগ। এ রোগকে অবহেলা করা মোটেই উচিত নয়। জন্ডিস রোগীর যত্নের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১) সম্পূর্ণ বিশ্রাম গ্রহণ জন্ডিস রোগের উত্তম চিকিৎসা।
২) কম মসলা দিয়ে তরিতরকারি রান্না করতে হবে।
৩) আগে ধারণা করা হতো আখ ও আখের গুড়ের শরবত, ডাবের পানি, পাকা পেঁপে রোগীকে বেশি করে খাওয়ানো উচিত। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসকেরা এগুলো বেশি পরিমাণে খেতে নিষেধ করেন।
৪) সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে বিশ্রাম নিতে হবে।
৫) চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি।
৬) জন্ডিসের টিকা নিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
প্রশ্ন: এইডস রোগের লক্ষণগুলো কী?
উত্তর: এইডস রোগের লক্ষণগুলো নিচে দেওয়া হলো:
* রোগীর দেহের ওজন কমে যায়।
* এক মাসের বেশি সময় একটানা জ্বর থাকে।
* অনেক দিন পর্যন্ত শুকনো কাশি থাকে।
* অনেক দিন পর্যন্ত পাতলা পায়খানা হয়।
* সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
* ঘাড় বা বগলে অসহ্য ব্যথা হয়।
* রোগীর বুদ্ধি কমে যায় ও কোনো কিছু মনে রাখতে পারে না।
এইচআইভি মানুষের দেহের রক্তে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়। আজ পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশে এ রোগের ওষুধ আবিষ্কার হয়নি।
প্রশ্ন: যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ বর্ণনা করো।
উত্তর: যক্ষ্মা একটা মারাত্মক বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ। একে টিবি বা ক্ষয়রোগ বলা হয়। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এ রোগ সৃষ্টি করে। যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ নিম্নরূপ—
* বিকেলের দিকে অল্প অল্প জ্বর ও রাতে ঘাম হয়।
* তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকে।
* ক্রমাগত ওজন কমে যায় ও শরীর দুর্বল হতে থাকে।
* বুকে ও পিঠের ওপরের দিকে ব্যথা হয়।
* রোগ বেড়ে গেলে কাশির সঙ্গে রক্ত বের হয়।
প্রশ্ন: আমাশয় রোগ প্রতিরোধ করার উপায়গুলো লেখো।
উত্তর: আমাশয় রোগ প্রতিরোধ করার উপায়গুলো নিম্নরূপ—
* নিরাপদ পানি পান করতে হবে।
* স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে হবে।
* নোংরা, পচা, বাসি, খোলা খাবার পরিহার করতে হবে।
* কাঁচা ফলমূল, শাকসবজি খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
* খাবার সর্বদা ঢেকে রাখতে হবে।
* মলত্যাগের পর ও খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
এ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা করানো উচিত। সময়মতো চিকিৎসা না হলে যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

প্রশ্ন: বাতজ্বর হওয়ার কারণ কী? বাতজ্বরের লক্ষণগুলো কী?
উত্তর: বাতজ্বর আমাদের দেশের একটা পরিচিত রোগ। শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি।
বাতজ্বরের কারণ—
১. অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করলে এ রোগ হয়।
২. স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার ঘরে বহু দিন বাস করলে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
৩. স্ট্রেপটোকক্কাস নামক এক ধরনের জীবাণুর আক্রমণে এ রোগ হয়।
বাতজ্বরের লক্ষণগুলো হলো—
১. ঘন ঘন জ্বর ও গলা ব্যথা হয়।
২. শিশু কিছু খেতে চায় না, তার দেহের ওজন কমতে থাকে।
৩. হাত বা পায়ের গিঁটে ব্যথা হয়।
৪. মাঝেমধ্যে বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। ৫. শিশুর ওজন কমতে থাকে।
প্রশ্ন: কান ভালো রাখার জন্য কী কী করা উচিত?
উত্তর: কান দিয়ে আমরা শুনি। কান একটা শ্রবণেন্দ্রিয়।
কান ভালো রাখার নিয়ম—
১. কান নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
২. কানে কোনো রকম আঘাত যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩. শিশুদের কানে পানি বা দুধ ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
৪. ছুঁচালো কোনো কাঠি দিয়ে কান পরিষ্কার করা উচিত নয়।
৫. কানের খৈল বা ময়লা বের করার জন্য বড়দের সাহায্য নিতে হবে।
৬. কানে কোনো পোকামাকড় ঢুকলে চিকিৎসকের সাহায্যে তা বের করা উচিত।
৭. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কানে কোনো রকম ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়।
প্রশ্ন: মানুষ কীভাবে গোল কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়?
উত্তর: অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে কৃমি সহজে বিস্তার লাভ করে। গোলকৃমি অন্ত্রে ডিম পাড়ে। এ ডিম মলের সঙ্গে দেহের বাইরে আসে। ডিমগুলো ময়লা বা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। এ ডিমগুলো যখন খাবার বা পানির সঙ্গে মানুষের অন্ত্রে প্রবেশ করে, কেবল তখনই খোলস ত্যাগ করে লার্ভা বের হয়। যেসব উপায়ে কৃমির ডিম মানুষের অন্ত্রে প্রবেশ করে তা হলো—
১. হাত না ধুয়ে খাবার খেলে।
২. শাকসবজি ও ফলমূল না ধুয়ে খেলে।
৩. মলত্যাগের পর ও খাবার খাওয়ার আগে হাত সাবান দিয়ে ভালো করে না ধুলে।
৪. নখ বড় থাকলে।
৫. লোকজন মলত্যাগ করে এমন জায়গায় খালি পায়ে হাঁটলে।

No comments:

Post a Comment