কবিতা ‘কে?’
প্রিয় শিক্ষার্থী, প্রীতি ও শুভেচ্ছাসহ স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের পড়াশোনায়। ধারাবাহিক পাঠ আলোচনায় আজ রয়েছে বাংলা বিষয়ের ‘কে?’ কবিতা। রচনা করেছেন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত। আশা করি, এরই মধ্যে কবিতাটি তোমাদের মুখস্থ হয়ে গেছে। এসো, তাহলে এবার কবি পরিচিতি ও কবিতার মূলভাব জেনে নিয়ে পাঠ্যসূচিতে প্রবেশ করা যাক।
কবি পরিচিতি: কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ১৮১২ সালে পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালডাঙ্গা কাঁচড়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রচুর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও হাসির কবিতা রচনা করেছেন। ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। তিনি জীবিত থাকতে তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘প্রবোধ প্রভাকর’ প্রকাশিত হয়। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। ১৮৫৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মূলভাব: কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত ‘কে?’ কবিতায় পৃথিবীতে ধার্মিক, সুখী, বিজ্ঞ, ধীর, সাধু, জ্ঞানী ও মূর্খ ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে। স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি যে ব্যক্তির দয়া ও সহানুভূতি রয়েছে, এই পৃথিবীতে সে ব্যক্তিই ধার্মিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে থাকেন। সব সময় যিনি রোগমুক্ত জীবনযাপন করেন, তিনিই প্রকৃত সুখী। ভালোমন্দ জ্ঞান বিবেচনা যার প্রখর তাকেই বিজ্ঞ বলা যায়। যে ব্যক্তি বিপদ-আপদে বিচলিত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করে বিপদ মোকাবিলা করতে জানেন, সেই ব্যক্তিই প্রকৃত ধীর স্বভাবের ব্যক্তি। যে ব্যক্তি নিজের ভালোমন্দ বোঝে না, নিজের ক্ষতি নিজে করে, সে নির্বোধ, তাকে মূর্খ বলা হয়। পরোপকারী ব্যক্তিকে সাধু বলা হয়। তিনিই প্রকৃত সাধু ব্যক্তি, যিনি পরের কারণে স্বার্থ বলি দেন। আর সে ব্যক্তিই সত্যিকার অর্থে জ্ঞানী, যার ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা রয়েছে।
প্রশ্ন: নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখো:
ধার্মিক সর্বজীবে সতত
আরোগী বিজ্ঞ হিতাহিত
মূর্খ বোধ সাধু
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ শব্দের অর্থ
ধার্মিক — যিনি নিজ ধর্মীয় আদেশ-নির্দেশ মেনে চলেন।
সর্বজীবে — সব রকম জীবের প্রতি।
সতত — সব সময়।
আরোগী — নীরোগ।
বিজ্ঞ — যার বিশেষ জ্ঞান আছে।
হিতাহিত — কল্যাণ ও অকল্যাণ।
মূর্খ — নিতান্ত বোকা, যার কোনো বোধশক্তি নেই।
বোধ — বোঝার ক্ষমতা।
সাধু — সৎ, ধার্মিক।
প্রশ্ন: বাক্য রচনা করো:
ধার্মিক সতত আরোগী বিজ্ঞ
হিতাহিত মূর্খ বোধ সাধু
স্থির জ্ঞানী সুখী সর্বজীবে
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ বাক্য রচনা
ধার্মিক — ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ধার্মিক ছিলেন।
সতত — সতত ভালো কাজ করব, কারও মনে দুঃখ দেব না।
আরোগী — সিরাজের অটুট স্বাস্থ্য দেখলেই বোঝা যায় সে আরোগী।
বিজ্ঞ — বিজ্ঞ লোকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া ভালো।
হিতাহিত — হিতাহিত বিবেচনা করে কাজ করা ভালো।
মূর্খ — কথায় আছে মূর্খ বন্ধুর চেয়ে জ্ঞানী শত্রু ভালো।
বোধ — নিজ বোধ ও বিবেচনা দিয়ে আমাদের কাজ করা দরকার।
সাধু — লোকটি যেমন সাধু, তেমনি নিরহংকার।
স্থির — তিনিই প্রকৃত ধীর ব্যক্তি যিনি বিপদে স্থির থাকেন।
জ্ঞানী — তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি যিনি ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা রাখেন।
সুখী — সব সময় যিনি রোগমুক্ত জীবন যাপন করেন তিনিই প্রকৃত সুখী।
সর্বজীবে— সর্বজীবে দয়া করা মানুষের কর্তব্য।
প্রশ্ন: প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির কোন গুণ থাকা উচিত?
উত্তর: স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি যার অসীম দয়া ও সহানুভূতি রয়েছে সেই প্রকৃত ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির যেসব গুণ থাকা উচিত তা হলো: স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য, স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি সমান দয়া ও সহানুভূতি, ধৈর্যশীল ও সর্বজীবে সেবা প্রদানের মনোবৃত্তি।
প্রশ্ন: প্রকৃত সুখী মানুষ কে?
উত্তর: সেই প্রকৃত সুখী, যার কোনো রোগ নেই। প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হয়েও অনেকে সুখী জীবন যাপন করতে পারে না। আবার স্বল্প সম্পদে, সন্তুষ্টচিত্তে যে ব্যক্তি সব সময় রোগমুক্ত জীবন যাপন করে থাকে সুখ তার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। কাজেই রোগমুক্ত বা নীরোগ ব্যক্তিই প্রকৃত সুখী মানুষ।
প্রশ্ন: হিতাহিত বোধ আছে এমন ব্যক্তি কে?
উত্তর: হিতাহিত শব্দটির অর্থ কল্যাণ ও অকল্যাণ। হিত শব্দের অর্থ কল্যাণ। অহিত অর্থ অকল্যাণ। আর বোধ শব্দটির অর্থ হলো বোঝার ক্ষমতা। হিতাহিত বোধ বলতে আমরা বুঝি কল্যাণ ও অকল্যাণ বোঝার ক্ষমতা। কাজেই যে ব্যক্তির ভালোমন্দ বোধ আছে, যিনি কল্যাণ ও অকল্যাণ বুঝে কাজ করে থাকে তিনিই হিতাহিত বোধসম্পন্ন ব্যক্তি। হিতাহিত বোধসম্পন্ন ব্যক্তি সমাজে বিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন: সাধু ও মূর্খ ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: সাধু ও মূর্খ ব্যক্তির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। সাধু বলতে আমরা সেই ব্যক্তিকে বুঝে থাকি, যিনি পরের ভালো করে থাকেন, পরের কারণে স্বার্থ বলি দেন। সব সময় অপরের বিপদ-আপদে সাহায্য ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। পরোপকারে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। অপর দিকে মূর্খ বলতে আমরা সেই ব্যক্তিকে বুঝে থাকি, যিনি নিতান্ত বোকা। যার বোধ শক্তি নেই। নিজের ভালোমন্দ বোঝে না, নিজের ক্ষতি নিজেই করে। সাধু হলেন সৎ ও ধার্মিক ব্যক্তি। আর মূর্খ হলেন নিতান্ত বোকা, নির্বোধ ব্যক্তি।
প্রশ্ন: জ্ঞানী ব্যক্তি কে?
উত্তর: নিজের সম্পর্কে যার ভালোমন্দ জ্ঞান আছে, যার ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা আছে, তাকেই জ্ঞানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োজিত থেকে যে ব্যক্তি সুশীলসমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন এবং স্বীয় কর্মবৈশিষ্ট্যে সচেতন থেকে, মানব কল্যাণে নিবেদিত থেকে ভালোমন্দ মূল্যায়নের ক্ষমতা রাখেন, এ জগতে তিনিই জ্ঞানী ব্যক্তি।
প্রশ্ন: ব্যাখ্যা লেখো: বিপদে যে স্থির থাকে, ধীর বলি তারে।
উত্তর: আলোচ্য পদ্যাংশটুকু কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত ‘কে?’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
এখানে ধীর স্বভাবসম্পন্ন ব্যক্তির প্রকৃতি ব্যক্ত করা হয়েছে। ভালোমন্দ, সুখ-দুঃখ নিয়ে মানব জীবন। যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ মানুষের সুন্দর জীবনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। যে ব্যক্তি বিপদ-আপদে, দুঃখ-শোকে স্থির থাকতে পারেন, বিচলিত না হয়ে সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি, বিপদ-আপদ মোকাবিলা করতে জানেন, সেই ব্যক্তিই সমাজে ধীর স্বভাবের ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। প্রকৃত অর্থে তিনিই প্রকৃত ধীর, যিনি বিপদে বিচলিত হন না।
প্রিয় শিক্ষার্থী, প্রীতি ও শুভেচ্ছাসহ স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের পড়াশোনায়। ধারাবাহিক পাঠ আলোচনায় আজ রয়েছে বাংলা বিষয়ের ‘কে?’ কবিতা। রচনা করেছেন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত। আশা করি, এরই মধ্যে কবিতাটি তোমাদের মুখস্থ হয়ে গেছে। এসো, তাহলে এবার কবি পরিচিতি ও কবিতার মূলভাব জেনে নিয়ে পাঠ্যসূচিতে প্রবেশ করা যাক।
কবি পরিচিতি: কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ১৮১২ সালে পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালডাঙ্গা কাঁচড়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রচুর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও হাসির কবিতা রচনা করেছেন। ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। তিনি জীবিত থাকতে তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘প্রবোধ প্রভাকর’ প্রকাশিত হয়। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। ১৮৫৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মূলভাব: কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত ‘কে?’ কবিতায় পৃথিবীতে ধার্মিক, সুখী, বিজ্ঞ, ধীর, সাধু, জ্ঞানী ও মূর্খ ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে। স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি যে ব্যক্তির দয়া ও সহানুভূতি রয়েছে, এই পৃথিবীতে সে ব্যক্তিই ধার্মিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে থাকেন। সব সময় যিনি রোগমুক্ত জীবনযাপন করেন, তিনিই প্রকৃত সুখী। ভালোমন্দ জ্ঞান বিবেচনা যার প্রখর তাকেই বিজ্ঞ বলা যায়। যে ব্যক্তি বিপদ-আপদে বিচলিত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করে বিপদ মোকাবিলা করতে জানেন, সেই ব্যক্তিই প্রকৃত ধীর স্বভাবের ব্যক্তি। যে ব্যক্তি নিজের ভালোমন্দ বোঝে না, নিজের ক্ষতি নিজে করে, সে নির্বোধ, তাকে মূর্খ বলা হয়। পরোপকারী ব্যক্তিকে সাধু বলা হয়। তিনিই প্রকৃত সাধু ব্যক্তি, যিনি পরের কারণে স্বার্থ বলি দেন। আর সে ব্যক্তিই সত্যিকার অর্থে জ্ঞানী, যার ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা রয়েছে।
প্রশ্ন: নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখো:
ধার্মিক সর্বজীবে সতত
আরোগী বিজ্ঞ হিতাহিত
মূর্খ বোধ সাধু
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ শব্দের অর্থ
ধার্মিক — যিনি নিজ ধর্মীয় আদেশ-নির্দেশ মেনে চলেন।
সর্বজীবে — সব রকম জীবের প্রতি।
সতত — সব সময়।
আরোগী — নীরোগ।
বিজ্ঞ — যার বিশেষ জ্ঞান আছে।
হিতাহিত — কল্যাণ ও অকল্যাণ।
মূর্খ — নিতান্ত বোকা, যার কোনো বোধশক্তি নেই।
বোধ — বোঝার ক্ষমতা।
সাধু — সৎ, ধার্মিক।
প্রশ্ন: বাক্য রচনা করো:
ধার্মিক সতত আরোগী বিজ্ঞ
হিতাহিত মূর্খ বোধ সাধু
স্থির জ্ঞানী সুখী সর্বজীবে
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ বাক্য রচনা
ধার্মিক — ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ধার্মিক ছিলেন।
সতত — সতত ভালো কাজ করব, কারও মনে দুঃখ দেব না।
আরোগী — সিরাজের অটুট স্বাস্থ্য দেখলেই বোঝা যায় সে আরোগী।
বিজ্ঞ — বিজ্ঞ লোকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া ভালো।
হিতাহিত — হিতাহিত বিবেচনা করে কাজ করা ভালো।
মূর্খ — কথায় আছে মূর্খ বন্ধুর চেয়ে জ্ঞানী শত্রু ভালো।
বোধ — নিজ বোধ ও বিবেচনা দিয়ে আমাদের কাজ করা দরকার।
সাধু — লোকটি যেমন সাধু, তেমনি নিরহংকার।
স্থির — তিনিই প্রকৃত ধীর ব্যক্তি যিনি বিপদে স্থির থাকেন।
জ্ঞানী — তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি যিনি ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা রাখেন।
সুখী — সব সময় যিনি রোগমুক্ত জীবন যাপন করেন তিনিই প্রকৃত সুখী।
সর্বজীবে— সর্বজীবে দয়া করা মানুষের কর্তব্য।
প্রশ্ন: প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির কোন গুণ থাকা উচিত?
উত্তর: স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি যার অসীম দয়া ও সহানুভূতি রয়েছে সেই প্রকৃত ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির যেসব গুণ থাকা উচিত তা হলো: স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য, স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি সমান দয়া ও সহানুভূতি, ধৈর্যশীল ও সর্বজীবে সেবা প্রদানের মনোবৃত্তি।
প্রশ্ন: প্রকৃত সুখী মানুষ কে?
উত্তর: সেই প্রকৃত সুখী, যার কোনো রোগ নেই। প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হয়েও অনেকে সুখী জীবন যাপন করতে পারে না। আবার স্বল্প সম্পদে, সন্তুষ্টচিত্তে যে ব্যক্তি সব সময় রোগমুক্ত জীবন যাপন করে থাকে সুখ তার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। কাজেই রোগমুক্ত বা নীরোগ ব্যক্তিই প্রকৃত সুখী মানুষ।
প্রশ্ন: হিতাহিত বোধ আছে এমন ব্যক্তি কে?
উত্তর: হিতাহিত শব্দটির অর্থ কল্যাণ ও অকল্যাণ। হিত শব্দের অর্থ কল্যাণ। অহিত অর্থ অকল্যাণ। আর বোধ শব্দটির অর্থ হলো বোঝার ক্ষমতা। হিতাহিত বোধ বলতে আমরা বুঝি কল্যাণ ও অকল্যাণ বোঝার ক্ষমতা। কাজেই যে ব্যক্তির ভালোমন্দ বোধ আছে, যিনি কল্যাণ ও অকল্যাণ বুঝে কাজ করে থাকে তিনিই হিতাহিত বোধসম্পন্ন ব্যক্তি। হিতাহিত বোধসম্পন্ন ব্যক্তি সমাজে বিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন: সাধু ও মূর্খ ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: সাধু ও মূর্খ ব্যক্তির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। সাধু বলতে আমরা সেই ব্যক্তিকে বুঝে থাকি, যিনি পরের ভালো করে থাকেন, পরের কারণে স্বার্থ বলি দেন। সব সময় অপরের বিপদ-আপদে সাহায্য ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। পরোপকারে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। অপর দিকে মূর্খ বলতে আমরা সেই ব্যক্তিকে বুঝে থাকি, যিনি নিতান্ত বোকা। যার বোধ শক্তি নেই। নিজের ভালোমন্দ বোঝে না, নিজের ক্ষতি নিজেই করে। সাধু হলেন সৎ ও ধার্মিক ব্যক্তি। আর মূর্খ হলেন নিতান্ত বোকা, নির্বোধ ব্যক্তি।
প্রশ্ন: জ্ঞানী ব্যক্তি কে?
উত্তর: নিজের সম্পর্কে যার ভালোমন্দ জ্ঞান আছে, যার ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা আছে, তাকেই জ্ঞানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োজিত থেকে যে ব্যক্তি সুশীলসমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন এবং স্বীয় কর্মবৈশিষ্ট্যে সচেতন থেকে, মানব কল্যাণে নিবেদিত থেকে ভালোমন্দ মূল্যায়নের ক্ষমতা রাখেন, এ জগতে তিনিই জ্ঞানী ব্যক্তি।
প্রশ্ন: ব্যাখ্যা লেখো: বিপদে যে স্থির থাকে, ধীর বলি তারে।
উত্তর: আলোচ্য পদ্যাংশটুকু কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত ‘কে?’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
এখানে ধীর স্বভাবসম্পন্ন ব্যক্তির প্রকৃতি ব্যক্ত করা হয়েছে। ভালোমন্দ, সুখ-দুঃখ নিয়ে মানব জীবন। যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ মানুষের সুন্দর জীবনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। যে ব্যক্তি বিপদ-আপদে, দুঃখ-শোকে স্থির থাকতে পারেন, বিচলিত না হয়ে সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি, বিপদ-আপদ মোকাবিলা করতে জানেন, সেই ব্যক্তিই সমাজে ধীর স্বভাবের ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। প্রকৃত অর্থে তিনিই প্রকৃত ধীর, যিনি বিপদে বিচলিত হন না।
No comments:
Post a Comment