প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমাদের জন্য পরিবেশ পরিচিতি সমাজ বইয়ের
অধ্যায়-১৩ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নমুনা প্রশ্নোত্তর ধারাবাহিকভাবে আলোচনা
করব।
প্রশ্ন: সঠিক শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো:
ক) পলাশীর যুদ্ধে — বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
উত্তর: পলাশীর যুদ্ধে মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
খ) ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ হয় বাংলা — সনে।
উত্তর: ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ হয় বাংলা ১১৭৬ সনে।
গ) হাজি শরীয়তউল্লাহ — আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
উত্তর: হাজি শরীয়তউল্লাহ ফরায়েজি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
ঘ) সিপাহি বিদ্রোহকে — প্রথম সংগ্রামও বলা হয়।
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহকে স্বাধীনতার প্রথম সংগ্রামও বলা হয়।
ঙ) ইংরেজ আমলে দেশীয় শিক্ষার স্থান দখল করে — শিক্ষা।
উত্তর: ইংরেজ আমলে দেশীয় শিক্ষার স্থান দখল করে পাশ্চাত্য শিক্ষা।
প্রশ্ন: নিচের শুদ্ধ উক্তিগুলোর ডান পাশে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ উক্তিগুলোর ডান পাশে ‘অ’ লেখ:
ক) ১০০ বছর এ দেশে কোম্পানির শাসন চলে। ‘শু’
খ) রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাসের মাধ্যমে ‘ভাইসরয়’ পদ চালু হয়। ‘অ’
গ) বিধবা বিবাহ আইন প্রবর্তনে অবদান রাখেন রাজা রামমোহন রায়। ‘শু’
ঘ) সৈয়দ আমীর আলী ‘সেন্ট্রাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশন’ গঠন করেন। ‘শু’
ঙ) ‘স্বরাজ দলের’ লক্ষ্য ছিল স্বরাজ প্রতিষ্ঠা করা। ‘শু’
প্রশ্ন: বাঁ পাশের কথাগুলোর সঙ্গে ডান পাশের কথাগুলোর মিল করো:
ক) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন
খ) রাজা রামমোহন রায়
গ) সিপাহি বিপ্লবের স্মৃতি বহন করছে
ঘ) ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়
ঙ) ইংরেজ আমলে উপমহাদেশের
ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করে
মুসলিম লীগ
সমাজ ও সংস্কৃতি অনেকটা বদলে যায়
লর্ড কর্নওয়ালিস
বাহাদুর শাহ পার্ক
লর্ড ওয়েসলি
উত্তর:
ক) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন লর্ড কর্নওয়ালিস
খ) রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন
গ) সিপাহি বিপ্লবের স্মৃতি বহন করছে বাহাদুর শাহ্ পার্ক
ঘ) ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মুসলিম লীগ
ঙ) ইংরেজ আমলে উপমহাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি অনেকটা বদলে যায়
প্রশ্ন: সঠিক উত্তরটি লেখো:
১) দ্বৈত শাসনপদ্ধতির কারণে কে প্রকৃত ক্ষমতার মালিত হন?
ক) নবাব খ) ইংরেজরা গ) জনগণ ঘ) সিপাহিরা
উত্তর: ইংরেজরা।
২) কে বাংলার মুসলমানদের শিক্ষার জন্য অগাধ ধনসম্পত্তি দান করেন?
ক) হাজি শরীয়তউল্লাহ খ) মহসিন উদ্দিন দুদু মিয়া
গ) হাজি মুহম্মদ মুহসীন ঘ) সৈয়দ আমীর আলী
উত্তর: হাজি মুহম্মদ মুহসীন।
৩) ১৯০৫ সালে কী হয়?
ক) বঙ্গভঙ্গ খ) সিপাহি বিপ্লব গ) ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ঘ) নীল বিপ্লব
উত্তর: বঙ্গভঙ্গ।
৪) মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে কোন আন্দোলন হয়?
ক) ফরায়েজি আন্দোলন খ) বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন
গ) স্বরাজ আন্দোলন ঘ) অসহযোগ আন্দোলন
উত্তর: অসহযোগ আন্দোলন।
৫) ইংরেজ আমলে বাংলার কোনটি ধ্বংস হয়?
ক) খাদ্যশিল্প খ) ওষুধশিল্প গ) বস্ত্রশিল্প ঘ) অলংকারশিল্প।
উত্তর: বস্ত্রশিল্প।
প্রশ্ন: সংক্ষেপে উত্তর দাও।
প্রশ্ন: নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে কারা যোগ দেন?
উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে যোগ দেন এ দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তা রায়দুর্লভ, জগৎ শেঠ, মীর জাফর, উমিচাঁদ, রাজবল্লভ প্রমুখ।
প্রশ্ন: ‘দ্বৈত শাসন’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা লর্ড ক্লাইভের সময় বাংলায় দ্বৈত শাসন প্রবর্তিত হয়। এ ব্যবস্থায় ইংরেজরা নবাবের হাত থেকে আর্থিক অধিকার কেড়ে নেয় এবং শুধু শাসনকার্য পরিচালনার দায়ভার তাঁর হাতে থাকে। এ পদ্ধতির কারণে নবাব ক্ষমতাহীন হয়ে যান এবং প্রকৃত ক্ষমতা চলে যায় ইংরেজদের হাতে। এটি ইংরেজ আমলের দ্বৈত শাসন।
প্রশ্ন: ভারত শাসন আইন পাসের ফলে কী হয়?
উত্তর: সিপাহি বিপ্লবের পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘ভারত শাসন আইন’ পাস হয়। এই আইন এ দেশে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটায়। তখন থেকে ইংল্যান্ডের মহারানি ভিক্টোরিয়ার নামে ইংরেজ সরকার সরাসরি উপমহাদেশে শাসন করতে থাকে।
প্রশ্ন: সংস্কারক হিসেবে রাজা রামমোহন রায় কী অবদান রাখেন?
উত্তর: উনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক শিক্ষিত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। তাঁদের মধ্যে কজন মনীষী ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেন। এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ছিলেন রাজা রামমোহন রায়। তিনি হিন্দুধর্মকে কুসংস্কারমুক্ত করার চেষ্টা চালান। এরই সূত্র ধরে তিনি ‘ব্রাহ্মধর্মের’ প্রবর্তন করেন। নতুন ধর্মমত প্রচার ও আরাধনার জন্য ‘ব্রাহ্মসমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। তখনকার হিন্দুসমাজে প্রচলিত সতীদাহ প্রথা, কৌলীন্য প্রথা ও বাল্যবিবাহ প্রথা বিলোপের ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ভারতে পাশ্চাত্য ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল। তিনি হিন্দুসমাজে নারী শিক্ষা এবং সম্পত্তিতে নারীর উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও সোচ্চার ছিলেন। এসব বিষয়ে তিনি লেখালেখি করেন এবং পত্রপত্রিকাও প্রকাশ করেন।
প্রশ্ন: মুসলমান সমাজের ক্ষেত্রে নওয়াব আমীর আলীর অবদান কী?
উত্তর: সৈয়দ আমীর আলী বাংলার মুসলমানদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সচেতন করার উদ্দেশ্যে ‘সেন্ট্রাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। অচিরেই বাংলা ও বাংলার বাইরে এই প্রতিষ্ঠানের শাখা ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে আমীর আলী ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক জাগরণে অবদান রাখেন। তাঁদের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে মুসলমানদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা ও পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে। এর ফলে দিনে দিনে মুসলমানদের মধ্যে নবজাগরণ দেখা দেয়।
প্রশ্ন: বাংলার মুসলমান সমাজ কেন বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানায়?
উত্তর: ১৯০৫ সালে পূর্ব বাংলা ও আসাম নিয়ে ইংরেজ সরকার নতুন একটি প্রদেশ গঠন করে। ঢাকা হয় এর রাজধানী। এ ঘটনাকে বলা হয় বঙ্গভঙ্গ। পূর্ব বাংলায় মুসলমানরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। নতুন প্রদেশ হওয়ায় এখানে তাদের শিক্ষা, চাকরি ও ব্যবসার সুযোগ বাড়ে। নবাব স্যার সলিমুল্লাহসহ মুসলমান সমাজের ব্যাপক অংশ বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানায়।
প্রশ্ন: কোন উদ্দেশ্যে ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর: অসহযোগ আন্দোলনে ব্যর্থ হলে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে চিত্তরঞ্জন দাস, মতিলাল নেহরু প্রমুখ ‘স্বরাজ পার্টি’ নামে আলাদা একটি দল গঠন করেন। এই দলের লক্ষ্য ছিল স্বরাজ প্রতিষ্ঠা করা। চিত্তরঞ্জন দাস ব্রিটিশবিরোধী যেকোনো তৎপরতায় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। এ উদ্দেশ্যে ১৯২৩ সালে তিনি মুসলমান নেতাদের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এটি ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ নামে পরিচিতি পায়। অবশ্য এই চুক্তি বাস্তবায়নের উদাহরণ হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলকাতা পৌর করপোরেশনের ডেপুটি মেয়র হন।
প্রশ্ন: ‘লাহোর প্রস্তাব’-এর মূল বক্তব্য কী?
উত্তর: বাংলার রাজনীতিতে চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তন। এ পর্যায়ে ইংরেজবিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হয়। কংগ্রেস হিন্দু নেতাদের মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাব এবং আরও নানাবিধ কারণে অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমানের মধ্যে এই ধারণা জন্মায় যে তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আলাদা রাষ্ট্রের প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে ১৯৪০ সালে মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে শেরেব্যাংলা এ কে ফজলুল হক একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এটি ‘লাহোর প্রস্তাব’ নামে খ্যাত।
প্রশ্ন: সঠিক শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো:
ক) পলাশীর যুদ্ধে — বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
উত্তর: পলাশীর যুদ্ধে মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
খ) ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ হয় বাংলা — সনে।
উত্তর: ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ হয় বাংলা ১১৭৬ সনে।
গ) হাজি শরীয়তউল্লাহ — আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
উত্তর: হাজি শরীয়তউল্লাহ ফরায়েজি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
ঘ) সিপাহি বিদ্রোহকে — প্রথম সংগ্রামও বলা হয়।
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহকে স্বাধীনতার প্রথম সংগ্রামও বলা হয়।
ঙ) ইংরেজ আমলে দেশীয় শিক্ষার স্থান দখল করে — শিক্ষা।
উত্তর: ইংরেজ আমলে দেশীয় শিক্ষার স্থান দখল করে পাশ্চাত্য শিক্ষা।
প্রশ্ন: নিচের শুদ্ধ উক্তিগুলোর ডান পাশে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ উক্তিগুলোর ডান পাশে ‘অ’ লেখ:
ক) ১০০ বছর এ দেশে কোম্পানির শাসন চলে। ‘শু’
খ) রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাসের মাধ্যমে ‘ভাইসরয়’ পদ চালু হয়। ‘অ’
গ) বিধবা বিবাহ আইন প্রবর্তনে অবদান রাখেন রাজা রামমোহন রায়। ‘শু’
ঘ) সৈয়দ আমীর আলী ‘সেন্ট্রাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশন’ গঠন করেন। ‘শু’
ঙ) ‘স্বরাজ দলের’ লক্ষ্য ছিল স্বরাজ প্রতিষ্ঠা করা। ‘শু’
প্রশ্ন: বাঁ পাশের কথাগুলোর সঙ্গে ডান পাশের কথাগুলোর মিল করো:
ক) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন
খ) রাজা রামমোহন রায়
গ) সিপাহি বিপ্লবের স্মৃতি বহন করছে
ঘ) ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়
ঙ) ইংরেজ আমলে উপমহাদেশের
ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করে
মুসলিম লীগ
সমাজ ও সংস্কৃতি অনেকটা বদলে যায়
লর্ড কর্নওয়ালিস
বাহাদুর শাহ পার্ক
লর্ড ওয়েসলি
উত্তর:
ক) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন লর্ড কর্নওয়ালিস
খ) রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন
গ) সিপাহি বিপ্লবের স্মৃতি বহন করছে বাহাদুর শাহ্ পার্ক
ঘ) ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মুসলিম লীগ
ঙ) ইংরেজ আমলে উপমহাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি অনেকটা বদলে যায়
প্রশ্ন: সঠিক উত্তরটি লেখো:
১) দ্বৈত শাসনপদ্ধতির কারণে কে প্রকৃত ক্ষমতার মালিত হন?
ক) নবাব খ) ইংরেজরা গ) জনগণ ঘ) সিপাহিরা
উত্তর: ইংরেজরা।
২) কে বাংলার মুসলমানদের শিক্ষার জন্য অগাধ ধনসম্পত্তি দান করেন?
ক) হাজি শরীয়তউল্লাহ খ) মহসিন উদ্দিন দুদু মিয়া
গ) হাজি মুহম্মদ মুহসীন ঘ) সৈয়দ আমীর আলী
উত্তর: হাজি মুহম্মদ মুহসীন।
৩) ১৯০৫ সালে কী হয়?
ক) বঙ্গভঙ্গ খ) সিপাহি বিপ্লব গ) ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ঘ) নীল বিপ্লব
উত্তর: বঙ্গভঙ্গ।
৪) মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে কোন আন্দোলন হয়?
ক) ফরায়েজি আন্দোলন খ) বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন
গ) স্বরাজ আন্দোলন ঘ) অসহযোগ আন্দোলন
উত্তর: অসহযোগ আন্দোলন।
৫) ইংরেজ আমলে বাংলার কোনটি ধ্বংস হয়?
ক) খাদ্যশিল্প খ) ওষুধশিল্প গ) বস্ত্রশিল্প ঘ) অলংকারশিল্প।
উত্তর: বস্ত্রশিল্প।
প্রশ্ন: সংক্ষেপে উত্তর দাও।
প্রশ্ন: নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে কারা যোগ দেন?
উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে যোগ দেন এ দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তা রায়দুর্লভ, জগৎ শেঠ, মীর জাফর, উমিচাঁদ, রাজবল্লভ প্রমুখ।
প্রশ্ন: ‘দ্বৈত শাসন’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা লর্ড ক্লাইভের সময় বাংলায় দ্বৈত শাসন প্রবর্তিত হয়। এ ব্যবস্থায় ইংরেজরা নবাবের হাত থেকে আর্থিক অধিকার কেড়ে নেয় এবং শুধু শাসনকার্য পরিচালনার দায়ভার তাঁর হাতে থাকে। এ পদ্ধতির কারণে নবাব ক্ষমতাহীন হয়ে যান এবং প্রকৃত ক্ষমতা চলে যায় ইংরেজদের হাতে। এটি ইংরেজ আমলের দ্বৈত শাসন।
প্রশ্ন: ভারত শাসন আইন পাসের ফলে কী হয়?
উত্তর: সিপাহি বিপ্লবের পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘ভারত শাসন আইন’ পাস হয়। এই আইন এ দেশে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটায়। তখন থেকে ইংল্যান্ডের মহারানি ভিক্টোরিয়ার নামে ইংরেজ সরকার সরাসরি উপমহাদেশে শাসন করতে থাকে।
প্রশ্ন: সংস্কারক হিসেবে রাজা রামমোহন রায় কী অবদান রাখেন?
উত্তর: উনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক শিক্ষিত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। তাঁদের মধ্যে কজন মনীষী ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেন। এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ছিলেন রাজা রামমোহন রায়। তিনি হিন্দুধর্মকে কুসংস্কারমুক্ত করার চেষ্টা চালান। এরই সূত্র ধরে তিনি ‘ব্রাহ্মধর্মের’ প্রবর্তন করেন। নতুন ধর্মমত প্রচার ও আরাধনার জন্য ‘ব্রাহ্মসমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। তখনকার হিন্দুসমাজে প্রচলিত সতীদাহ প্রথা, কৌলীন্য প্রথা ও বাল্যবিবাহ প্রথা বিলোপের ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ভারতে পাশ্চাত্য ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল। তিনি হিন্দুসমাজে নারী শিক্ষা এবং সম্পত্তিতে নারীর উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও সোচ্চার ছিলেন। এসব বিষয়ে তিনি লেখালেখি করেন এবং পত্রপত্রিকাও প্রকাশ করেন।
প্রশ্ন: মুসলমান সমাজের ক্ষেত্রে নওয়াব আমীর আলীর অবদান কী?
উত্তর: সৈয়দ আমীর আলী বাংলার মুসলমানদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সচেতন করার উদ্দেশ্যে ‘সেন্ট্রাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। অচিরেই বাংলা ও বাংলার বাইরে এই প্রতিষ্ঠানের শাখা ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে আমীর আলী ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক জাগরণে অবদান রাখেন। তাঁদের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে মুসলমানদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা ও পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে। এর ফলে দিনে দিনে মুসলমানদের মধ্যে নবজাগরণ দেখা দেয়।
প্রশ্ন: বাংলার মুসলমান সমাজ কেন বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানায়?
উত্তর: ১৯০৫ সালে পূর্ব বাংলা ও আসাম নিয়ে ইংরেজ সরকার নতুন একটি প্রদেশ গঠন করে। ঢাকা হয় এর রাজধানী। এ ঘটনাকে বলা হয় বঙ্গভঙ্গ। পূর্ব বাংলায় মুসলমানরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। নতুন প্রদেশ হওয়ায় এখানে তাদের শিক্ষা, চাকরি ও ব্যবসার সুযোগ বাড়ে। নবাব স্যার সলিমুল্লাহসহ মুসলমান সমাজের ব্যাপক অংশ বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানায়।
প্রশ্ন: কোন উদ্দেশ্যে ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর: অসহযোগ আন্দোলনে ব্যর্থ হলে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে চিত্তরঞ্জন দাস, মতিলাল নেহরু প্রমুখ ‘স্বরাজ পার্টি’ নামে আলাদা একটি দল গঠন করেন। এই দলের লক্ষ্য ছিল স্বরাজ প্রতিষ্ঠা করা। চিত্তরঞ্জন দাস ব্রিটিশবিরোধী যেকোনো তৎপরতায় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। এ উদ্দেশ্যে ১৯২৩ সালে তিনি মুসলমান নেতাদের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এটি ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ নামে পরিচিতি পায়। অবশ্য এই চুক্তি বাস্তবায়নের উদাহরণ হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলকাতা পৌর করপোরেশনের ডেপুটি মেয়র হন।
প্রশ্ন: ‘লাহোর প্রস্তাব’-এর মূল বক্তব্য কী?
উত্তর: বাংলার রাজনীতিতে চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তন। এ পর্যায়ে ইংরেজবিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হয়। কংগ্রেস হিন্দু নেতাদের মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাব এবং আরও নানাবিধ কারণে অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমানের মধ্যে এই ধারণা জন্মায় যে তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আলাদা রাষ্ট্রের প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে ১৯৪০ সালে মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে শেরেব্যাংলা এ কে ফজলুল হক একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এটি ‘লাহোর প্রস্তাব’ নামে খ্যাত।
No comments:
Post a Comment