প্রিয় শিক্ষার্থী, স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের ধারাবাহিক পাঠ আলোচনায়,
আলোচ্যসূচিতে রয়েছে বাংলা বিষয়ের ‘জলপরী ও কাঠুরের গল্প’। গল্পটি ছোটদের
বিশ্বসাহিত্য থেকে সংকলিত।
সততার মূল্য অতুলনীয়। সৎ মানুষকে সবাই ভালোবাসে। সততার পুরস্কার পাওয়া যায়। লোভ মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। লোভী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। কথায় বলে—লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। এই মূল ভাব নিয়ে ‘জলপরী ও কাঠুরের গল্প’টি লিখেছেন—ঈশপ। আজ থেকে দুই হাজার ২০০ বছর আগে গ্রিস দেশে জন্মেছিলেন গল্পকার ঈশপ। তিনি ছিলেন একজন সামান্য ক্রীতদাস। তখনকার দিনে রোম ও গ্রিসে ক্রীতদাস প্রথা প্রচলিত ছিল। ঈশপ কী ছিলেন, তার চেয়ে বড় কথা তিনি যে সাহিত্য রচনা করে গেছেন, তা চিরসুন্দর ও চিরস্থায়ী। তাঁর লেখায় ভাব যেমন গভীর, ভাষা তেমনি সহজ ও সরল। ঈশপ রচিত প্রতিটি গল্পের মধ্যে কিছু না কিছু মূল্যবান উপদেশ আছে। তাঁর নীতিকথামূলক গল্পগুলো বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
শিক্ষার্থীরা, গল্পের মূলভাব এবং গল্প লেখক সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া হলো। এবার চলো এই গল্পের কয়েকটি শব্দের অর্থ জেনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে মূল গল্পের আলোচনা শুরু করা যাক।
প্রশ্ন: শব্দগুলোর অর্থ লেখো: কুড়াল, সানন্দে, সংগতি
উত্তর: প্রদত্ত শব্দ শব্দের অর্থ
কুড়াল কুঠার।
সানন্দে পরম আনন্দে।
সংগতি উপায়।
প্রশ্ন: বাক্য রচনা করো: কাঠুরিয়া, কুড়াল, জলপরী, সানন্দে, সংগতি।
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ বাক্য রচনা
কাঠুরিয়া—কাঠুরিয়া বনে কাঠ কাটে।
কুড়াল—কাঠুরিয়া কুড়াল দিয়ে কাঠ কাটে।
জলপরী—জলপরী সত্যবাদী কাঠুরিয়াকে পুরস্কার দিল।
সানন্দে—মামার সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাবে আমি সানন্দে রাজি হয়ে গেলাম।
সংগতি—কাঠুরিয়ার কুড়াল কেনার সংগতি ছিল না।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়া রোজ কী করত?
উত্তর: ঈশপ রচিত ‘জলপরী ও কাঠুরের গল্প’টিতে একজন কাঠুরিয়ার কথা বলা হয়েছে। সে ছিল খুব গরিব। কাঠুরিয়া রোজ একটি বনে কাঠ কাটতে যেত। দৈনিক কাঠ কেটে বিক্রি করে যা রোজগার করত, তাই দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে পরে তার দিন চলত।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়ার দিন কীভাবে চলত?
উত্তর: গল্পের রাজা ঈশপ রচিত ‘জলপরী’ ও কাঠুরের গল্প’টিতে একজন কাঠুরিয়ার জীবনকাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। কাঠুরিয়া একটি বনে রোজ কাঠ কাটতে যেত। দৈনিক কাঠ বিক্রি করে যা রোজগার করত, তাই দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে পরে কাঠুরিয়ার দিন চলত।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়া কেন কাঁদতে লাগল?
উত্তর: কোনো একটি বনে কাঠুরিয়া রোজ কাঠ কাঠতে যেত। সে ছিল গরিব। দৈনিক কাঠ কেটে বিক্রি করে যা রোজগার করত, তাই দিয়ে কোনো রকমে তার দিন চলত। একদিন এক নদীর ধারে সে কাঠ কাটতে গেল। সেখানে গিয়ে একটা গাছে যেই কুড়াল দিয়ে ঘা মেরেছে, অমনি তার হাত ফসকে কুড়ালটি গভীর পানির মধ্যে পড়ে গেল। নদী ছিল খরস্রোতা। তা ছাড়া নদীতে কুমিরের ভয়ও ছিল ভয়ানক। রোজগারের সম্বল একমাত্র কুড়ালটি হারিয়ে যাওয়ায় সে মুষড়ে পড়ে। তাই নিরুপায় হয়ে কাঠুরিয়া গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে লাগল।
প্রশ্ন: জলপরী কাঠুরিয়াকে কী বলল?
উত্তর: একদিন কাঠুরিয়া নদীর ধারে কাঠ কাটতে গেল। সেখানে গিয়ে কুড়াল দিয়ে গাছে ঘা মারার সঙ্গে সঙ্গে হাত ফসকে তার কুড়ালটি কুমিরে ভরা খরস্রোতা নদীতে পড়ে গেল। নিরুপায় হয়ে কাঠুরিয়া সেই গাছের গোড়ায় কাঁদতে লাগল। সে এতই গরিব ছিল যে তার আবার একটা কুড়াল কেনার মতো সংগতি ছিল না। তাই কী উপায় করবে, গাছের গোড়ায় বসে বসে সে ভাবতে লাগল। যত ভাবে, ততই তার চোখ দিয়ে পানি পড়ে। এমনি করে কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ এক জলপরী নদীর মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কাঠুরিয়ার কাছে তার কান্নার কারণ জানতে চাইল। কাঠুরিয়া জলপরীকে জানাল যে সে বড় গরিব, তার কুড়ালটা পানিতে পড়ে গেছে, তাই সে কাঁদছে। সব শুনে জলপরী কাঠুরিয়াকে বলল, আচ্ছা, তোমার কুড়াল এনে দিচ্ছি, তুমি কেঁদো না।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়ার সততা দেখে জলপরী কী করল?
উত্তর: গল্পে বর্ণিত কাঠুরিয়া তার রোজগারের একমাত্র সম্বল কুড়ালটি নদীর গভীর পানিতে হারিয়ে গাছের গোড়ায় বসে কাঁদছিল। কাঠুরিয়ার কান্না দেখে জলপরী তাকে তার কুড়ালটি এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নদীতে ডুব দেয়। জলপরী একে একে একটি সোনার কুড়াল ও একটি রুপার কুড়াল পানির মধ্য থেকে এনে কাঠুরিয়াকে দেখাল। কাঠুরিয়া জলপরীকে জানায়, এই সোনার কুড়াল, রুপার কুড়াল কোনোটিই তার নয়। তারপর জলপরী আবার পানিতে ডুব দিয়ে একটা লোহার কুড়াল এনে তাকে দেখাল। কাঠুরিয়া এতক্ষণ পরে সানন্দে স্বীকার করল, এই লোহার কুড়ালটিই তার জলপরী কাঠুরিয়ার এই সততা দেখে মুগ্ধ হলো। সে কাঠুরিয়াকে তার নিজের কুড়ালটি তো ফিরিয়ে দিলই, উপরন্তু সোনা ও রুপার কুড়াল দুটিও উপহার দিল। তারপর জলপরী পানির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল।
প্রশ্ন: কীভাবে কাঠুরিয়ার অবস্থার পরিবর্তন হলো?
উত্তর: গল্পে বর্ণিত কাঠুরিয়া ছিল খুবই গরিব। দৈনিক কাঠ বিক্রি করে যা রোজগার হতো, তাই দিয়ে কোনো রকমে তার দিন চলত। একদিন নদীর ধারে কাঠ কাটতে গেলে হাত ফসকে তার কুড়ালটি কুমিরে ভরা খরস্রোতা নদীর গভীর পানিতে পড়ে যায়। নিরুপায় কাঠুরিয়া গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে থাকে। এমন সময় এক জলপরী নদীর মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কাঠুরিয়ার কান্নার কারণ জানতে চাইল। কাঠুরিয়া জলপরীর কাছে তার কুড়াল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করলে জলপরী নদীতে ডুব দিয়ে প্রথমে একটি সোনার কুড়াল ও পরে একটি রুপার কুড়াল এনে কাঠুরিয়াকে দেখাল। কাঠুরিয়া গরিব হলেও সৎ ছিল। অকপটে জানিয়ে দিল, এগুলো তার নয়। তারপর জলপরী আবার ডুব দিয়ে একটি লোহার কুড়াল এনে কাঠুরিয়াকে দেখালে সে বলল, এটিই তার কুড়াল। জলপরী কাঠুরিয়ার সততায় মুগ্ধ হয়ে তাকে তার নিজের কুড়ালটি ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সোনার ও রুপার কুড়াল দুটিও উপহার দিল। এতখানি সোনা ও রুপা পেয়ে কাঠুরিয়ার অবস্থা বেশ ভালো হয়ে গেল। কেননা সেই কুড়াল দুটি বাজারে বিক্রি করে সে অনেক টাকা পেল। এভাবে কাঠুরিয়ার অবস্থার পরিবর্তন হলো এবং সুখে-শান্তিতে তার দিন কাটতে লাগল।
প্রশ্ন: লোভী কাঠুরিয়া কী করল?
উত্তর: সৎ কাঠুরিয়ার মুখ থেকে তার অবস্থার পরিবর্তনের গল্প শুনে আর একজন কাঠুরিয়ার মনে বড় লোভ জন্মাল। লোভী কাঠুরিয়া একদিন চুপি চুপি সেই নদীর ধারে গাছ কাটতে গিয়ে ইচ্ছে করেই তার কুড়ালটা নদীর পানির মধ্যে ফেলে দিল। তারপর সেখানে বসে অভিনয় করে কাঁদতে লাগল।
প্রশ্ন: লোভী কাঠুরিয়া কেন হায় হায় করতে লাগল?
উত্তর: সৎ কাঠুরিয়ার মুখ থেকে তার সুখ ও স্বচ্ছন্দ জীবনের গল্প শোনার পর আরেকজন কাঠুরিয়ার মনে বড় লোভ জন্মাল। লোভী কাঠুরিয়া একদিন চুপি চুপি সেই নদীর ধারে গাছ কাটতে গিয়ে ইচ্ছে করে তার কুড়ালটা পানির মধ্যে ফেলে দিয়ে সেখানে বসে অভিনয় করে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে আবার সেই জলপরী সেখানে আবির্ভূত হলো। আগের মতো এবারও জলপরী প্রথমে একটি সোনার কুড়াল তুলে লোভী কাঠুরিয়াকে জিজ্ঞেস করল, এটি তার কি না। লোভী কাঠুরিয়া সঙ্গে সঙ্গে ওই সোনার কুড়ালটি তার বলে দাবি করল। এ রকম মিথ্যাবাদিতায় জলপরীর মন খারাপ হয়ে গেল। সে তৎক্ষণাৎ ঝুপ করে ডুব দিয়ে চলে গেল পানির গভীরে। আর উঠল না। লোভী কাঠুরিয়া এ অবস্থা দেখে নিজের কপালে নিজে চড় মারতে লাগল। মিথ্যা বলার কারণে তার এই শাস্তি হলো।
সততার মূল্য অতুলনীয়। সৎ মানুষকে সবাই ভালোবাসে। সততার পুরস্কার পাওয়া যায়। লোভ মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। লোভী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। কথায় বলে—লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। এই মূল ভাব নিয়ে ‘জলপরী ও কাঠুরের গল্প’টি লিখেছেন—ঈশপ। আজ থেকে দুই হাজার ২০০ বছর আগে গ্রিস দেশে জন্মেছিলেন গল্পকার ঈশপ। তিনি ছিলেন একজন সামান্য ক্রীতদাস। তখনকার দিনে রোম ও গ্রিসে ক্রীতদাস প্রথা প্রচলিত ছিল। ঈশপ কী ছিলেন, তার চেয়ে বড় কথা তিনি যে সাহিত্য রচনা করে গেছেন, তা চিরসুন্দর ও চিরস্থায়ী। তাঁর লেখায় ভাব যেমন গভীর, ভাষা তেমনি সহজ ও সরল। ঈশপ রচিত প্রতিটি গল্পের মধ্যে কিছু না কিছু মূল্যবান উপদেশ আছে। তাঁর নীতিকথামূলক গল্পগুলো বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
শিক্ষার্থীরা, গল্পের মূলভাব এবং গল্প লেখক সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া হলো। এবার চলো এই গল্পের কয়েকটি শব্দের অর্থ জেনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে মূল গল্পের আলোচনা শুরু করা যাক।
প্রশ্ন: শব্দগুলোর অর্থ লেখো: কুড়াল, সানন্দে, সংগতি
উত্তর: প্রদত্ত শব্দ শব্দের অর্থ
কুড়াল কুঠার।
সানন্দে পরম আনন্দে।
সংগতি উপায়।
প্রশ্ন: বাক্য রচনা করো: কাঠুরিয়া, কুড়াল, জলপরী, সানন্দে, সংগতি।
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ বাক্য রচনা
কাঠুরিয়া—কাঠুরিয়া বনে কাঠ কাটে।
কুড়াল—কাঠুরিয়া কুড়াল দিয়ে কাঠ কাটে।
জলপরী—জলপরী সত্যবাদী কাঠুরিয়াকে পুরস্কার দিল।
সানন্দে—মামার সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাবে আমি সানন্দে রাজি হয়ে গেলাম।
সংগতি—কাঠুরিয়ার কুড়াল কেনার সংগতি ছিল না।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়া রোজ কী করত?
উত্তর: ঈশপ রচিত ‘জলপরী ও কাঠুরের গল্প’টিতে একজন কাঠুরিয়ার কথা বলা হয়েছে। সে ছিল খুব গরিব। কাঠুরিয়া রোজ একটি বনে কাঠ কাটতে যেত। দৈনিক কাঠ কেটে বিক্রি করে যা রোজগার করত, তাই দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে পরে তার দিন চলত।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়ার দিন কীভাবে চলত?
উত্তর: গল্পের রাজা ঈশপ রচিত ‘জলপরী’ ও কাঠুরের গল্প’টিতে একজন কাঠুরিয়ার জীবনকাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। কাঠুরিয়া একটি বনে রোজ কাঠ কাটতে যেত। দৈনিক কাঠ বিক্রি করে যা রোজগার করত, তাই দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে পরে কাঠুরিয়ার দিন চলত।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়া কেন কাঁদতে লাগল?
উত্তর: কোনো একটি বনে কাঠুরিয়া রোজ কাঠ কাঠতে যেত। সে ছিল গরিব। দৈনিক কাঠ কেটে বিক্রি করে যা রোজগার করত, তাই দিয়ে কোনো রকমে তার দিন চলত। একদিন এক নদীর ধারে সে কাঠ কাটতে গেল। সেখানে গিয়ে একটা গাছে যেই কুড়াল দিয়ে ঘা মেরেছে, অমনি তার হাত ফসকে কুড়ালটি গভীর পানির মধ্যে পড়ে গেল। নদী ছিল খরস্রোতা। তা ছাড়া নদীতে কুমিরের ভয়ও ছিল ভয়ানক। রোজগারের সম্বল একমাত্র কুড়ালটি হারিয়ে যাওয়ায় সে মুষড়ে পড়ে। তাই নিরুপায় হয়ে কাঠুরিয়া গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে লাগল।
প্রশ্ন: জলপরী কাঠুরিয়াকে কী বলল?
উত্তর: একদিন কাঠুরিয়া নদীর ধারে কাঠ কাটতে গেল। সেখানে গিয়ে কুড়াল দিয়ে গাছে ঘা মারার সঙ্গে সঙ্গে হাত ফসকে তার কুড়ালটি কুমিরে ভরা খরস্রোতা নদীতে পড়ে গেল। নিরুপায় হয়ে কাঠুরিয়া সেই গাছের গোড়ায় কাঁদতে লাগল। সে এতই গরিব ছিল যে তার আবার একটা কুড়াল কেনার মতো সংগতি ছিল না। তাই কী উপায় করবে, গাছের গোড়ায় বসে বসে সে ভাবতে লাগল। যত ভাবে, ততই তার চোখ দিয়ে পানি পড়ে। এমনি করে কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ এক জলপরী নদীর মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কাঠুরিয়ার কাছে তার কান্নার কারণ জানতে চাইল। কাঠুরিয়া জলপরীকে জানাল যে সে বড় গরিব, তার কুড়ালটা পানিতে পড়ে গেছে, তাই সে কাঁদছে। সব শুনে জলপরী কাঠুরিয়াকে বলল, আচ্ছা, তোমার কুড়াল এনে দিচ্ছি, তুমি কেঁদো না।
প্রশ্ন: কাঠুরিয়ার সততা দেখে জলপরী কী করল?
উত্তর: গল্পে বর্ণিত কাঠুরিয়া তার রোজগারের একমাত্র সম্বল কুড়ালটি নদীর গভীর পানিতে হারিয়ে গাছের গোড়ায় বসে কাঁদছিল। কাঠুরিয়ার কান্না দেখে জলপরী তাকে তার কুড়ালটি এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নদীতে ডুব দেয়। জলপরী একে একে একটি সোনার কুড়াল ও একটি রুপার কুড়াল পানির মধ্য থেকে এনে কাঠুরিয়াকে দেখাল। কাঠুরিয়া জলপরীকে জানায়, এই সোনার কুড়াল, রুপার কুড়াল কোনোটিই তার নয়। তারপর জলপরী আবার পানিতে ডুব দিয়ে একটা লোহার কুড়াল এনে তাকে দেখাল। কাঠুরিয়া এতক্ষণ পরে সানন্দে স্বীকার করল, এই লোহার কুড়ালটিই তার জলপরী কাঠুরিয়ার এই সততা দেখে মুগ্ধ হলো। সে কাঠুরিয়াকে তার নিজের কুড়ালটি তো ফিরিয়ে দিলই, উপরন্তু সোনা ও রুপার কুড়াল দুটিও উপহার দিল। তারপর জলপরী পানির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল।
প্রশ্ন: কীভাবে কাঠুরিয়ার অবস্থার পরিবর্তন হলো?
উত্তর: গল্পে বর্ণিত কাঠুরিয়া ছিল খুবই গরিব। দৈনিক কাঠ বিক্রি করে যা রোজগার হতো, তাই দিয়ে কোনো রকমে তার দিন চলত। একদিন নদীর ধারে কাঠ কাটতে গেলে হাত ফসকে তার কুড়ালটি কুমিরে ভরা খরস্রোতা নদীর গভীর পানিতে পড়ে যায়। নিরুপায় কাঠুরিয়া গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে থাকে। এমন সময় এক জলপরী নদীর মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কাঠুরিয়ার কান্নার কারণ জানতে চাইল। কাঠুরিয়া জলপরীর কাছে তার কুড়াল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করলে জলপরী নদীতে ডুব দিয়ে প্রথমে একটি সোনার কুড়াল ও পরে একটি রুপার কুড়াল এনে কাঠুরিয়াকে দেখাল। কাঠুরিয়া গরিব হলেও সৎ ছিল। অকপটে জানিয়ে দিল, এগুলো তার নয়। তারপর জলপরী আবার ডুব দিয়ে একটি লোহার কুড়াল এনে কাঠুরিয়াকে দেখালে সে বলল, এটিই তার কুড়াল। জলপরী কাঠুরিয়ার সততায় মুগ্ধ হয়ে তাকে তার নিজের কুড়ালটি ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সোনার ও রুপার কুড়াল দুটিও উপহার দিল। এতখানি সোনা ও রুপা পেয়ে কাঠুরিয়ার অবস্থা বেশ ভালো হয়ে গেল। কেননা সেই কুড়াল দুটি বাজারে বিক্রি করে সে অনেক টাকা পেল। এভাবে কাঠুরিয়ার অবস্থার পরিবর্তন হলো এবং সুখে-শান্তিতে তার দিন কাটতে লাগল।
প্রশ্ন: লোভী কাঠুরিয়া কী করল?
উত্তর: সৎ কাঠুরিয়ার মুখ থেকে তার অবস্থার পরিবর্তনের গল্প শুনে আর একজন কাঠুরিয়ার মনে বড় লোভ জন্মাল। লোভী কাঠুরিয়া একদিন চুপি চুপি সেই নদীর ধারে গাছ কাটতে গিয়ে ইচ্ছে করেই তার কুড়ালটা নদীর পানির মধ্যে ফেলে দিল। তারপর সেখানে বসে অভিনয় করে কাঁদতে লাগল।
প্রশ্ন: লোভী কাঠুরিয়া কেন হায় হায় করতে লাগল?
উত্তর: সৎ কাঠুরিয়ার মুখ থেকে তার সুখ ও স্বচ্ছন্দ জীবনের গল্প শোনার পর আরেকজন কাঠুরিয়ার মনে বড় লোভ জন্মাল। লোভী কাঠুরিয়া একদিন চুপি চুপি সেই নদীর ধারে গাছ কাটতে গিয়ে ইচ্ছে করে তার কুড়ালটা পানির মধ্যে ফেলে দিয়ে সেখানে বসে অভিনয় করে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে আবার সেই জলপরী সেখানে আবির্ভূত হলো। আগের মতো এবারও জলপরী প্রথমে একটি সোনার কুড়াল তুলে লোভী কাঠুরিয়াকে জিজ্ঞেস করল, এটি তার কি না। লোভী কাঠুরিয়া সঙ্গে সঙ্গে ওই সোনার কুড়ালটি তার বলে দাবি করল। এ রকম মিথ্যাবাদিতায় জলপরীর মন খারাপ হয়ে গেল। সে তৎক্ষণাৎ ঝুপ করে ডুব দিয়ে চলে গেল পানির গভীরে। আর উঠল না। লোভী কাঠুরিয়া এ অবস্থা দেখে নিজের কপালে নিজে চড় মারতে লাগল। মিথ্যা বলার কারণে তার এই শাস্তি হলো।
No comments:
Post a Comment