3.9.11

সমাজ: অধ্যায়-৫

# রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর।
প্রশ্ন: সমাজে মানবাধিকারবিরোধী কয়েকটি কাজ উল্লেখ করো। প্রতিটি ঘটনার একটি করে কুফল লেখো।
উত্তর: মানবাধিকারবিরোধী কয়েকটি কাজ হলো:
ক) শিশুশ্রম
খ) সাম্প্রদায়িকতা
গ) যৌতুক ঘ) নারী ও শিশু পাচার
ঙ) এসিড নিক্ষেপ।
নিচে এর কুফলগুলো তুলে ধরা হলো:
শিশুশ্রম: শিশুশ্রমের ফলে মানবাধিকার চূড়ান্তভাবে লঙ্ঘিত হয়। শিশুশ্রমিকেরা লেখাপড়ার সুযোগ পায় না, অনেক ক্ষেত্রে মজুরিও ঠিকমতো পায় না; এমনকি খাওয়া, থাকার জায়গা, চিকিৎসা সুবিধা, পোশাক ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের প্রতি বৈষম্য করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে তারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে।
সাম্প্রদায়িকতা: সাম্প্রদায়িকতার কারণে অন্য ধর্মের লোকদের অবজ্ঞা করলে বা তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে সমাজ ও দেশের শান্তি নষ্ট হয়। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় জাতিতে-জাতিতে যুদ্ধ সংঘটিত হওয়া বিচিত্র কিছু নয়।
যৌতুক: যৌতুকের কারণে নারীর ওপর নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। সামর্থ্যের অভাবে যৌতুক দিতে না পারায় আমাদের দেশে অনেক নারীই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, এমনকি মৃত্যুবরণও করছেন।
নারী ও শিশু পাচার: পাচারকৃত ছোট শিশুরা উটের জকি হিসেবে কাজ করতে গিয়ে অনেকে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে, মারাও যাচ্ছে অনেকে। পাচারকৃত নারীরা বিদেশে নানা ধরনের কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন, যা তাঁদের জন্য উপযুক্ত সম্মান বয়ে আনছে না; অর্থাৎ পাচারকৃত নারী ও শিশুরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
এসিড নিক্ষেপ: এসিড নিক্ষেপ মানবাধিকারের চরম বিরোধী। আমাদের দেশে অনেকে, বিশেষ করে মেয়েরা এসিড নির্যাতনের শিকার হন। এতে তাঁদের চেহারা বিকৃত হয়ে যায়, চোখ নষ্ট হয়ে যায় এবং অনেকে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েন। এ কারণে সমাজের জন্য তাঁরা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
প্রশ্ন: মানবাধিকার বাস্তবায়িত না হলে সমাজে কী অসুবিধা সৃষ্টি হয়?
উত্তর: মানুষের জন্মই যখন অধিকার ভোগ করা, তখন মানবাধিকারের বাস্তবসম্মত প্রয়োগ না হলে জীবনে কতটা বাধা আসবে, তা বর্ণনাতীত। স্বাধীন, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য মানবাধিকারের বিকল্প নেই। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আমরা যেসব সুবিধা বা অধিকার ভোগ করছি, তা সম্ভব হয়েছে একমাত্র মানবাধিকারের কল্যাণে। মানুষের মানবাধিকার বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র প্রত্যেকেরই দায়িত্ব হলো সমাজে মানবাধিকার বাস্তবায়ন করা। সমাজে মানবাধিকার বাস্তবায়িত না হলে নিচের অসুবিধা সৃষ্টি হয়:
১। শিশুশ্রম বেড়ে যায়।
২। নারী ও শিশু পাচার বেড়ে যায়।
৩। এসিড নিক্ষেপ বেড়ে যায়।
৪। সাম্প্রদায়িকতা ও যৌতুকের প্রবণতা বেড়ে যায়।
৫। মানুষের মর্যাদা নষ্ট হয়।
৬। মানুষের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা কমে যায়।
৭। নির্যাতন ও অত্যাচার বেড়ে যায়।
৮। সুষ্ঠু বিচার পাওয়া যায় না।
৯। নিজ নিজ ধর্ম পালনে অসুবিধা হয়।
১০। শিক্ষা গ্রহণের অধিকার অনিশ্চিত হয়ে যায়।

No comments:

Post a Comment