13.7.12

জোনাকিরা


প্রিয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী শিক্ষার্থীরা, বাংলা বিষয়ের পড়াশোনায় তোমাদের স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আলোচ্যসূচিতে আজ রয়েছে কবি আহসান হাবীব রচিত কবিতা ‘জোনাকিরা’। এসো তাহলে, শুরুতেই ‘জোনাকিরা’ কবিতার মূল ভাব জেনে নেওয়া যাক।
জোনাকি পোকা অন্ধকারে মিটমিট করে। যখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে, তখন জোনাকিরা দল বেঁধে ঝোপঝাড়ে আলো ছড়ায়। এই আলো ছড়ানোর ভেতর দিয়েই তারা আনন্দ ও ভালোবাসার খেলা খেলে। অন্যকে আলো বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যেই জোনাকির আনন্দ।
 নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখো।
শাখা, এলোমেলো, থৈ থৈ, অবাক, আওয়াজ, আলোর পাখি।

উত্তর :
প্রদত্ত শব্দ শব্দের অর্থ
শাখা— গাছের ডাল
এলোমেলো— অগোছালো
থৈ থৈ— ভরে ওঠা
অবাক— বিস্মিত
আওয়াজ— শব্দ
আলোর পাখি— যে পাখি আলো ছড়ায়
 নিচের শব্দগুলো ব্যবহার করে সার্থক বাক্য রচনা করো।
জোনাকি, অন্ধকার, ভয়, হীরে-মানিক, সাধ, শাখা
উত্তর:
প্রদত্ত শব্দ বাক্য রচনা
জোনাকি : রাতের অন্ধকারে জোনাকিরা আলো ছড়ায়।
অন্ধকার : অন্ধকারে পথ চলা বিপজ্জনক।
ভয় : জোনাকির আলো দেখে পাখিরা ভয় পেয়েছিল।
হীরে-মানিক : হীরে-মানিক মূল্যবান বস্তু।
সাধ : নিজের আলো দিয়ে অপরকে আলোকিত করা জোনাকিদের ভালোবাসার সাধ।
শাখা : অন্ধকার রাতে ঝাউয়ের শাখায় জোনাকিরা ভিড় জমায়।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
প্রশ্ন: জোনাকিরা কোথায় এসে ভিড় জমাল?
উত্তর: প্রকৃতির বুকে যখন বৃষ্টিভেজা এলোমেলো শীতের হাওয়া বইছিল, তখন জোনাকিরা একটি দুটি তিনটি করে এল। তারপর ঝাউবনের শাখায় শাখায় পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা পাখির পাখায় এসে তারা ভিড় জমাল।
প্রশ্ন: ঝাউয়ের শাখা আর পাখিরা ভয়ে কেঁপে উঠছিল কেন?
উত্তর: জোনাকিরা আলো বয়ে বেড়ায়। রাতের বেলা যখন অন্ধকার চারদিক ঘিরে ফেলে, জোনাকিরা তখন ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসে। এদের আলোয় ঝোপঝাড় আলোকিত হয়ে ওঠে। বৃষ্টিভেজা অন্ধকার রাতে উড়ে বেড়ানো অসংখ্য জোনাকির পাখায় শনশন শব্দ আর হঠাৎ আলোর ঝলক দেখে ঝাউয়ের শাখা আর পাখিরা ভয়ে কেঁপে উঠেছিল।
প্রশ্ন: জোনাকিরা পাখিদের কী বলল?
উত্তর: আলোর পাখি জোনাকিরা অন্ধকার রাতে ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসে। দল বেঁধে ওদের হঠাৎ আগমন রাতের আঁধারকে রহস্যময় করে তোলে। ওদের পাখায় শনশন শব্দ আর আলোর ঝলক দেখে পাখিরা চমকে ওঠে, ভয় পায়। পাখিদের এই অসহায় অবস্থা দেখে জোনাকিরা পাখিদের বলল, তাদের আগমনে পাখিরা ভয় পেয়েছে কি না।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
প্রশ্ন: ঝাউয়ের শাখায় পাখির পাখায় হীরে-মানিক জ্বলে। এই হীরে-মানিক কারা?
উত্তর: প্রখ্যাত কবি আহসান হাবীব ‘জোনাকিরা’ কবিতার এই লাইনে ‘হীরে-মানিক’ বলতে আলোর পাখি জোনাকিদের বুঝিয়েছেন। হীরে-মানিক অনেক মূল্যবান ধাতু। উজ্জ্বল আলো ছড়ানো হীরে-মানিকের সৌন্দর্যও অতুলনীয়। শীতের হাওয়ায় অন্ধকার রাতে ঝাউবনের শাখায় শাখায় পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা পাখির পাখায় জোনাকিরা এসে যখন ভিড় জমায় আর আলো ছড়ায়, তখন মনে হয়, অসংখ্য হীরে-মানিক প্রকৃতির চারদিকে জ্বলজ্বল করছে। কবির কল্পনায় অনুভূতিতে অনুভূত এই হীরে-মানিক হলো আলোর পাখি জোনাকিরা
প্রশ্ন: ‘তোমরা কি ভাই নীল আকাশের তারা?’—কথাটি কে কাকে বলেছে? কেন বলেছে?
উত্তর: কবি আহসান হাবীব রচিত অপূর্ব ছন্দময় ‘জোনাকিরা’ কবিতায় কথাটি শীতের হাওয়া জোনাকিদের বলেছে।
অন্ধকার রাতে এলোমেলো শীতের হাওয়ায় জোনাকিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসে। ঝাউয়ের শাখায় পাখির পাখায় ওরা আলো ছড়িয়ে বেড়ায়। এই আলো ছড়ানোর দৃশ্য অনেকটা নীল আকাশে তারার ঝলকের মতো। থেকে থেকে জ্বলে ওঠা জোনাকিদের এমন আলোর ঝলক দেখে শীতের হাওয়া চমকে উঠে থমকে দাঁড়ায় এবং জানতে চায়, এরা নীল আকাশের তারা কি না। কারণ, অন্ধকার রাতে এমন দৃশ্য কেবল নীল আকাশেই দেখা যায়।
প্রশ্ন: প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা লেখো
‘নিজকে জ্বেলে এই আমাদের ভালোবাসার খেলা।’
উত্তর: আলোচ্য অংশটুকু কবি আহসান হাবীব রচিত ‘জোনাকিরা’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
অপূর্ব ভাষা ও ছন্দের মাধুর্যে এখানে জোনাকিদের পরোপকারের কথা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
জোনাকিরা আলো বয়ে বেড়ায়। রাতের বেলা যখন অন্ধকার চারদিক ঘিরে ফেলে, জোনাকিরা তখন ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসে। তাদের আলোয় ঝোপঝাড় আলোকিত হয়ে ওঠে। এভাবেই জোনাকিরা নিজের আলো দিয়ে অপরকে আলোকিত করে। অন্যের উপকার করার মধ্যেই জোনাকিদের আনন্দ। অন্যের উপকার করার মতো এ রকম গুণ আমাদেরও থাকা উচিত।
প্রশ্ন: জোনাকিদের পাখায় কেমন শব্দ শোনা যাচ্ছিল?
উত্তর: জমাট বাঁধা অন্ধকার রাতে জোনাকিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে এল। অন্ধকার রাতে ঝাউবনের শাখায় শাখায় ঘুরে বেড়ানো জোনাকিদের পাখায় শনশন শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

No comments:

Post a Comment